হেফাজতে ইসলামী এর সমাবেশ এ ব্লগার ইমরান ও শাহরিয়ার কবির কে গ্রেপ্তার এর দাবি
রাসুল (সাঃ) এর অবমাননাকারীদের ফাঁসি, নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলামবিরোধী ব্লগারদের সর্বোচ্চ শাস্তি, সংবিধানে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পূণঃস্থাপনসহ আল্লামা শাহ আহমাদ শফীর আহ্বানে আয়োজিত লংমার্চের কর্মসূচির ১৩ দফা দাবিতে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে চলছে।
একের পর এক নেতারা বক্তৃতা করছেন। সার্বিকভাবে সমাবেশ হচ্ছে শান্তিপূর্ণ। তবে রাজধানীসহ আশপাশে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বেলা ১১ টার মধ্যে গোটা মতিঝিল চত্বর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে আশপাশের সড়কগুলোও ভরে যায়। সকাল ১০ টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে হেফাজত নেতাদের বক্তৃতা শুরু হয়।
হেফাজত মঞ্চ থেকে বক্তরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের মূখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির এবং মাওলানা ফরীদউদ্দিন মাসুদকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
মহাসমাবেশে চট্টগ্রাম হেফাজতের প্রচার সম্পাদক আ ন ম আহমদউল্লাহ বলেন, তাদের গ্রেফতার করা না হলে সারাদেশে লংমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি চালানো হবে।
দুপুর ১টার দিকে মঞ্চ থেকে কয়েকটি টিভির লাইভ টেলিকাস্ট সরকার বন্ধ করে দিয়েছে-এমন ঘোষণা দেয়ার পর সমাবেশস্থলে মিছিল করে হেফাজতের কর্মীরা।
ঐ ঘোষণায় বলা হয়, সরকার এনটিভি, বাংলাভিশন ও নয়াদিগন্ত টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরই মিছিল করে কর্মীরা।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়। তবে সকাল ৮টার পর থেকে অনানুষ্ঠিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।
হেফজাতের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী, সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবু নগরী, হেফজত কমিটির সদস্য মাওলানা সফিক উদ্দিন কেন্দ্রীয় সদস্য ওলিউল্লাহ আরমান, শেখ গোলাম আসগর, মজিবুর রহমান পেশওয়ারীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
বেলা ১২টার দিকে সংগঠনের আমির আল্লামা জনসমুদ্রের মাঝখান দিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি।
মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকা হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতিও বাড়াতে থাকে।
হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা রাজধানীর আশপাশের এলাকা থেকে অনেকে ট্রাকে করে আবার অনেকে পায়ে হেঁটে মতিঝিলে আসার পথে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছেন। গাবতলীর আমিন বাজার ব্রিজের কাছে পুলিশি হয়রানির শিকার হন তারা।
গাজীপুর ও সাভার থেকে ট্রাকে করে আসার সময় আমিন বাজার ব্রিজের সামনে ট্রাক থেকে হেফাজতের কর্মীদের নামিয়ে দেয়া হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন ট্রাক ট্রাইভারকে আটক করেন সাভার থানার উপ পরিদর্শক ওয়ালি আশরাফ।
সমাবেশের মঞ্চ থেকে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মিছিলে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
কামরাঙ্গীচর থেকে আসা হেফাজতে ইসলামের একটি মিছিল হাজারীবাগ এলাকায় আসলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাধা ও নির্যাতন করছে। তারা বলেন, যতোই বাধা দেয়া হোক আমাদের কর্মসূচি বিনষ্ট করা যাবে না।
তারা বলেন, যদি এ নির্যাতন চলতে থাকে তাহলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে এবং প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে ইসলামের শত্রুদের মোকাবেলা করবে।
শনিবার ভোর থেকেই মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থিত হেফাজতে ইসলামের মঞ্চের সামনে সারা দেশ থেকে আগত নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করে রেখেছেন।
তাদের মুখে ’ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই নাস্তিকদের ফাঁসি চাই’। ‘যেখানে বাধা সেখানেই অবরোধ’সহ নানা স্লোগানে মতিঝিল মাতিয়ে রেখেছেন হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা।
এদিকে রাতেই প্রস্তুত করা হয়েছে ২০ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট প্রস্থের বাঁশ ও কাঠের তৈরি মঞ্চটি।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামের ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তাদের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছেন। সেখানে শত শত নেতাকর্মীরা প্রশাসনের বাধার পরও রাত থেকেই অবস্থান করছেন।
মঞ্চের নিরাপত্তা ও নাশকতা এড়াতে মঞ্চের চারপাশসহ সারা এলাকায় ২০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।