স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জননী’
মুক্তিযুদ্ধে নারীর আত্মত্যাগের গল্প নিয়ে রওশন আরা নীপা নির্মাণ করলেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জননী’। নীপার প্রকল্প ‘বীরাঙ্গনা বলছি’ এর প্রথম ধাপ এ চলচ্চিত্র।
নীপার চিত্রনাট্যে এ চলচ্চিত্রে বীরাঙ্গনাদের মানসিক দৃঢ়তা, দেশপ্রেম এবং আত্মত্যাগের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন জয়িতা মহলানবীশ। তার অভিনীত চরিত্রের নাম মনিরা। এতে একজন পাকিস্তানি আর্মি অফিসার ‘সাঈদ খুরশিদ’ –এর চরিত্রে দেখা যাবে শাহজাহান সম্রাটকে। এতে ছাত্রনেতা ‘সাহেদ’ এর চরিত্রে দেখা যাবে গায়ক প্রীতম আহমেদকে। ৭১’এর ২৫ মার্চ রাতে মনিরাদের বাড়ি আক্রমণ করে পাক
আর্মির দল। বাবা মাকে হত্যার পর মনিরার উপর নির্যাতন চালায় ক্যাপ্টেন সাঈদ খুরশিদ। মনিরাদের বাড়িতেই ক্যাম্প স্থাপন করে খুরশিদ। ক্যাম্পে গর্ভবতী হয়ে পড়ে মনিরা। মনিরা এ সন্তানকে নষ্ট করতে চায় কিন্তু খুরশিদ চায় তার সন্তান দুনিয়াতে আসুক। মনিরা নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এতে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। নীপা গ্লিটজকে বলেন, “এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মহান বীরাঙ্গনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তাদের যথাযথ ও সর্বোচ্চ সম্মান প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছি। বীরাঙ্গনাদের ব্যাপারে দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টিই আমাদের লক্ষ্য।” সিনেমাতে প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে ছিলেন রহমান লেনিন, চিত্রগ্রহণ করেছেন সিরাজুল ইসলাম। ১৯৯৬ সালে ওয়ার্ল্ড ভিউ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন রওশন আরা নীপা। ১৯৯৮ সালে ইউনিসেফের অর্থায়নে নির্মাণ করেন তার প্রথম ডকুফিল্ম ‘মধুর আমার মায়ের হাসি’। ২০০৪ সালে তার ডকুমেন্টারি ‘আমরাও পারি’ জিতেছিল এমি অ্যাওয়ার্ড। পরের বছর ইউনেস্কো ওপেন ফ্রেম ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রশংসিত হয় তার ডকুমেন্টারি ‘তেপান্তরের মাঠ’। ২০০৫ সালে যৌনপল্লীর কন্যাশিশুদের জীবনকাহিনি নিয়ে তিনি নির্মাণ করেন ‘চিলড্রেন ইন দ্য হিডেন ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি ডকুমেন্টারি। চলতি বছর দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চ মুখর হয়ে উঠলে তাদের রোডমার্চ নিয়ে ‘ভয় নেই পাশে আছি’ শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারিও নির্মাণ করেছেন তিনি। ডকুমেন্টারির পাশাপাশি তিনি বেশকটি টিভিনাটকও নির্মাণ করেছেন। তার নির্মিত প্রথম সিরিয়াল ‘ঠাকুরমার ঝুলি’। এরপর তিনি ‘আপন আমার আপন’, ‘বিজয়িনী’, ‘অবাক জলপান’ নামে আরও কিছু নাটক নির্মাণ করেন।