Published On: Mon, Sep 16th, 2013

সিপিবি-বাসদের সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলা

Share This
Tags

5235d07c30954-Sylhet-1সিলেটে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বিভাগীয় সমাবেশে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে হামলাকারীরা সমাবেশ মঞ্চে থাকা সিপিবির কেন্দ্রীয় সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমকে টেনেহিঁচড়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। আজ রোববার বিকেলে নগরের কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ চলাকালে ছাত্রলীগের আনন্দমিছিল থেকে এ হামলা চালানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা সরকারবিরোধী বক্তব্য রাখায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ হামলা চালান। হামলা ঠেকাতে এ সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ছাত্র ইউনিয়ন ও সিপিবির আরও প্রায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা শর্টগানের গুলি ছুড়ে হামলা ঠেকান। এ সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে পুলিশের এক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ছাত্রলীগের সাতজন আহত হন।

হামলার পর আবার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হামলার প্রতিবাদে কাল সোমবার সিলেটে আধাবেলা হরতালের ঘোষণা দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়। এ হরতালে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ শুরু হয়। পৌনে পাঁচটার দিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা সমাবেশ স্থলের উদ্দেশে অতর্কিতভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এরপর মুহুর্মুহু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ছাত্রলীগের কর্মীরা সমাবেশ স্থলের দিকে আসা শুরু করলে ছাত্র ইউনিয়ন, সিপিবি ও বাসদের কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাঁদের প্রতিরোধে ছাত্রলীগের কর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন। পাঁচ মিনিট পর পুনরায় ছাত্রলীগের কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে সমাবেশ স্থলে পৌঁছায়। সমাবেশে পৌঁছে তারা শতাধিক চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর করেন। এ সময় উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সহিদুজ্জামান পাপলু, ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক সপ্তর্ষি দাস, প্রচার সম্পাদক সজিব এষ, বিশ্ব ভট্টাচার্যসহ ১৫ জন আহত হন। তাঁরা সবাই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, হামলা চলাকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিরণ মাহমুদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা মঞ্চে উঠে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের ওপর চড়াও হন। ‘সরকারের বিরুদ্ধে বলছিস কেন—জামায়াতের চর…!’ প্রভৃতি কথা বলে টানাহেঁচড়া ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করেন। ছাত্রলীগের কর্মীদের টানাহেঁচড়ায় সেলিমের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। তাঁর বাঁ হাতে আঘাত করলে তিনি আহত হন। এ সময় ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে মঞ্চে উঠে ছাত্রলীগের কর্মীদের প্রতিহত করেন। কিছুক্ষণ সংঘর্ষে শেষে ছাত্রলীগের কর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন। এরপর সাড়ে পাঁচটার দিকে সমাবেশ পুনরায় শুরু হলে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় ছাত্র ইউনিয়নের কিছু বিক্ষুব্ধ কর্মী পাল্টা প্রতিরোধের আহ্বান জানান। সংঘর্ষ এড়াতে র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছাত্রলীগের কর্মীদের লক্ষ্য করে শর্টগানের গুলি ছুড়লে তাঁরা সিলেট সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে গিয়ে অবস্থান নেন।

নগর ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিরন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন খানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকটি পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছে। এ সময় ক্ষুব্ধ কর্মীদের ‘কমিউনিস্টরা জামায়াত-শিবিরের চর’ বলে চিত্কার করে গালাগাল দিতে শোনা যায়। হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিরন মাহমুদ তাত্ক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সুত্র – প্রথম আলো

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.