সংগীত প্রার্থনা সালমানের জন্য
প্রিয় তারকার জন্য ভক্তরা অনেকভাবেই ভালোবাসা প্রকাশ করেন। নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লেখা কিংবা পছন্দের তারকাকে কাছ থেকে একনজর দেখার জন্য সুদূর কোনো দেশ থেকে মুম্বাই যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এবার বলিউডের অভিনেতা সালমান খানের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের বিরল এক নজিরই গড়তে যাচ্ছেন সালমানের ভক্তরা। গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার মামলায় ফেঁসে বর্তমানে কঠিন সময় পার করছেন সালমান। এ অবস্থায় তাঁর প্রতি সমর্থন জানাতে সালমানের জন্য প্রার্থনা সংগীত বেঁধেছেন তাঁর ভক্তরা। তাঁরা শিগগির গানটি সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার ওয়েবসাইটে প্রকাশের পরিকল্পনা করেছেন।
বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় তারকা হওয়ার সুবাদে অগণিত ভক্ত পেয়েছেন ৪৮ বছর বয়সী সালমান। বরাবরই তাঁর ছবি মুক্তির সময় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন সালমানের ভক্তরা। আর সালমানের ছবি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য প্রকাশিত হলে রীতিমতো ফুঁসে উঠেছেন তাঁরা। সালমানের কোনো দোষই তাঁরা আমলে নিতে চান না।
সম্প্রতি সালমানের জন্য প্রার্থনা সংগীত রচনা ও সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার ওয়েবসাইটে শেয়ার করার ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন সালমানের টুইটার ফ্যান ক্লাবের ৮০ হাজারেরও বেশি সদস্য। সালমানের দুর্দিনে তাঁর প্রতি সহমর্মিতা ও সমর্থন প্রকাশই এর মূল লক্ষ্য। এরই মধ্যে প্রার্থনা সংগীত তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রসঙ্গত, মুম্বাইয়ে ২০০২ সালে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছিল বলিউডের অভিনেতা সালমান খানের বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকার পর গত বছর বেশ জোরেশোরেই শুরু হয় মামলার বিচার কার্যক্রম। চলতি মাসের শুরুর দিকে মামলার শুনানিতে মুম্বাই সেশন কোর্টে হাজির হন খান সাহেব। দুর্ঘটনার সময় সালমানই গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে সাক্ষ্য দেন দুই সাক্ষী।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুই সাক্ষী আদালতকে বলেন, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন সালমান। দুর্ঘটনার পরপরই গাড়ির চালকের আসন থেকে নেমে আসেন তিনি। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।
বলিউডে তুমুল জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অসংযত জীবনযাপনের জন্য কুখ্যাতি আছে সালমানের। এ জন্য তিনি ‘ব্যাড বয়’ তকমাও পেয়েছেন। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে মুম্বাইয়ে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। ওই দুর্ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছিলেন ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা আরও চার ব্যক্তি।
দুর্ঘটনার সময় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন সালমান। কিন্তু বরাবরই তাঁর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন না। ২০০৫ সালে সালমানের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। কোনো এক অজানা কারণে তাঁর প্রতি নমনীয় আচরণ করেন আদালত। বেপরোয়া ও অসতর্কভাবে গাড়ি চালানোর কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে রায় দেওয়া হয়। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মাত্র দুই বছরের কারাদণ্ড।
পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে সালমানকে কঠোর সাজা প্রদানের দাবি তোলা হয় মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে। পরে মামলাটির বিচার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর গত বছর ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩০৪(২) ধারায় সালমানের সাজা হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয় আদালতের পক্ষ থেকে। গুরুতর এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড।
বিষয়টি জানার পরপরই আপিল করেন সালমান। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার বিচার কার্যক্রম আবার পিছিয়ে যায়। কয়েক দফা শুনানির পর চলতি মাসের শুরুর দিকে আবার মামলাটির শুনানি হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছরের জেলের ঘানি টানতে হতে পারে এ ‘দাবাং’ তারকাকে।