Published On: Thu, Jun 19th, 2014

বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে হলে

Share This
Tags

ways-to-live-a-happy-life6-500x300বিশ্বাস করুন আর নাই করুন পৃথিবীতে এমন কোনো ওষুধ নেই যা আপনাকে বিষণ্নতা থেকে মুক্তি দেবে। ওষুধ হয়ত সাময়িক সময়ের জন্য আপনার মানসিক অবসাদ কমিয়ে রাখবে কিন্তু কখনোই অবসাদ বা বিষণ্নতা থেকে মুক্তি দেবে না। বরং জীবনের সামান্য কিছু পরিবর্তন আপনার মানসিকতায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, যা বিষণ্নতা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম
একটি রাত খারাপ কাটানোর জন্য ঘুম না হওয়াটাই যথেষ্ট। গবেষকরা বলছেন, সার্কাডিয়ান রিদমের সঙ্গে  বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশনের যোগ আছে। এই সার্কাডিয়ান রিদম (একে মস্তষ্কে বা মানুষের শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়িও বলা যায়) মস্তিষ্কে মেলাটিন হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় যা মানুষকে ঘুমাতে সাহায্য করে। এবং সস্পূরক হিসেবে ব্যবহার করে হালকা থেরাপির মাধ্যমে বিষণ্নতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

চরম বিষণ্নতার সঙ্গে আপনার লেনদেন থাকলে এবং এ থেকে মুক্ত হতে চাইলে পর্যাপ্ত ঘুম আপনার বিষণ্নতা প্রতিরোধে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।

২. শরীরচর্চা
আপনি হয়ত আগেই শুনেছেন নিয়মিত শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু শোনা পর্যন্তই শেষ। যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন না তাদের জন্য বলছি, নিয়মিত শরীর চর্চা শুধু শরীরের জন্যই না বরং মেজাজ ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  এজন্য আপনাকে ম্যারাথনে দৌঁড়াতে হবে বা ভারি কোনো কিছু করতে হবে এমন নয়।

সম্প্রতি বিষণ্ন ব্যক্তিদের শরীর চর্চা বা এক্সারসাইজের জন্য তাদের বাইসাইকেল চালাতে দেওয়া হয়। পরে গবেষণায় উঠে এসেছে যারা বাইসাইকেল চালিয়েছে মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে তাদের আচরণ ও শরীরে মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোন  করটিসলের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।

৩ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা
শুধুমাত্র একঘণ্টা দেরিতে সকালের নাস্তা খাওয়ার জন্য আপনার নিজেকে কি কখনো বিপর্যস্ত মনে হয়েছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, শরীরে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া মন তিরিক্ষি হয়ে যাওয়ার এক তরফা কারণ।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে বিষণ্নতার ক্ষেত্রে চিনি ‍বা শর্করার অভাব চিন্তার চেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। গবেষকরা ৬টি দেশের ডাটা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, চিনি শোষণ বা শর্করা কমে যাওয়া এবং বিষণ্নতার মাত্রার ভেতরে একটি উল্লেখযোগ্য আন্তঃসম্পর্ক রয়েছে।

বিষণ্নতা ‍কিংবা বিকেলের অবসাদ যেটাই দূর করেত চান না কেন রক্তে চিনি বা শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে হবে। কাজেই প্রতিদিন নিয়মিতভাবে প্রোটিনযুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
আপনি কি আপনার খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ রাখেন? গবেষণায় দেখা গেছে মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বিষণ্নতা  কমাতে সহায়তা করে। তিসি বীজ আর ‍আখরোট ওমেগা-৩ এর একটি ভালো উৎস। সব ধরনের মাছ, বিশেষ করে স্যামন ও ‍অন্যান্য লোনাপানির মাছ এবং মিষ্টি পানির মাছের মধ্যে রুই মাছে বেশি পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাট পাওয়া যায়।

৫. জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ 
যদি আপনি নিয়মিত খাদ্যগ্রহণ করেন, পর্যাপ্ত ঘুমান এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন তাহলে এমন কিছুই নেই যা আপনার মনকে বিষিয়ে তুলতে পারে বা বিষন্ন করতে পারে।

জাপান কমিউনিটিতে বয়োবৃদ্ধ মানুষের ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা যায় যে,  গবেষকরা তাদের জীবন ধারণ সম্পর্কে জানতে রি-কল রীতি ব্যবহার করেন। তারা দেখেন যে সব লোক পরিমিত খ্যাদ্য, নিয়মিত এক্সারসাইজ, এবং তাদের জীবনের ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পেরেছেন তাদের জীবনে কোনো বিষণ্নতার ইতিহাস নেই। এমন একটি উপায় বা কাজ খুঁজে বের করুন যা আপনাকে আনন্দ দেবে, আপনার মন ভালো রাখবে এবং আপনাকে বিষণ্নতার ঝুঁকিমুক্ত রাখবে।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.