Published On: Wed, Jun 26th, 2013

বন্ধু হেডফোন, শত্রু হেডফোন!!!!!!!

Share This
Tags

headবাসে ভিড়, একটা রিকশাও যেতে চায় না। পকেটে হেডফোনটাও নেই। এখন বাসায় যাই কীভাবে?’ পাশে দাঁড়ানো বন্ধুর কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকাতে হলো। বাস, রিকশায় চেপে নাহয় বাড়ি যাওয়া যায়; হেডফোন আবার যানবাহন হলো কবে? বন্ধুর পরের কথায় মিলল প্রশ্নের জবাব। ‘হেডফোন সঙ্গে থাকলে গান শুনতে শুনতে হেঁটেই বাসায় চলে যাই। এক ঘণ্টার পথ কীভাবে কীভাবে যেন পার হয়ে যায়!’
তাই তো! কানে কানে যদি কেউ গাইতে থাকে ‘পিচঢালা এই পথটাকে ভালোবেসেছি…’, বিরক্তিকর গরমেও পিচঢালা পথটার সঙ্গে কেমন যেন একটা ভালোবাসা হয়ে যায়।  নিজেকে মনে হয় সিনেমার কোনো চরিত্র। হেডফোনে শোনা গান সেখানে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক’! এফএম রেডিওর কল্যাণে একলা পথেও আজকাল বেশ সঙ্গী জুটে যায়। কথাবন্ধুদের কথায় কথায় সঙ্গ দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা তো আছেই, সঙ্গে থাকে দিন আর পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁদের ‘প্লে’ করা দারুণ সব গান। শুধু কি হাঁটাপথ? বিরক্তিকর যানজটে বসেও তরুণদের সঙ্গী হেডফোন বা ইয়ারফোন। বাস-ট্রাকের হর্নের কান ফাটানো শব্দ ছাপিয়ে কানে বাজে গিটারের টুংটাং। সময়ের তাড়া কিছুটা হলেও ভুলে থাকা যায়।
কাছাকাছি কোথাও গেলে হেডফোন না থাকলেও চলে, দূরের যাত্রায় হেডফোন সঙ্গে না থাকলে সময় কাটতেই চায় না!’ আপাতদৃষ্টিতে বন্ধু মনে হলেও এই হেডফোনই কখনো কখনো শত্রু হতে পারে। উচ্চমাত্রার শব্দ যেমন কানের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি গানে খুব বেশি মগ্ন হয়ে বেখেয়ালে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
এটা দীর্ঘ সময় কানের সঙ্গে থাকলে কানে সংক্রমণ হতে পারে। শব্দের মাত্রা কমিয়েও দীর্ঘ সময় শুনলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। হেডফোন বা মোবাইলের গান সাধারণত মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে আমাদের কানে পৌঁছায়, যা কানের জন্য ক্ষতিকর। আমরা সাধারণত নিয়মিত হেডফোন ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করি।’ একজন লোক যদি প্রতিদিন টানা ৪০ মিনিট উচ্চশব্দে হেডফোনে গান শোনে, অদূর ভবিষ্যতে এটি তার শ্রবণশক্তি হ্রাসের কারণ হতে পারে।
মনে রাখবেন———-
১  গাড়ি, সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল চালানোর সময় কানে হেডফোন থাকা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। হেডফোনের ও-প্রান্তে গান বাজুক বা না বাজুক, হেডফোন কানে থাকা চলবে না। এমনকি চলন্ত অবস্থায় হেডফোন ব্যবহার করে কারও সঙ্গে মুঠোফোনে কথাও বলা যাবে না।
২  রাস্তা পারাপারের সময় কোনোভাবেই হেডফোন ব্যবহার করবেন না।
৩  কানে হেডফোন থাকলে অবশ্যই ফুটপাত দিয়ে পথ চলবেন।
৪  হেডফোনে গান শোনার সময় শব্দের মাত্রা খুব বেশি না রাখাই ভালো। এতে করে কানের ক্ষতি হতে পারে। স্বাভাবিক মাত্রায় গান উপভোগ করুন।
৫   গান শুনতে শুনতে রেললাইন ধরে হাঁটবেন না।
৬  কারও সঙ্গে কথা বলার সময় কানে হেডফোন রাখবেন না। এতে করে আপনি যাঁর সঙ্গে কথা বলছেন, তাঁর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়।
বাজারের হালচাল
বাজারে বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ধরনের হেডফোন পাওয়া যায়। ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা দামের হেডফোনও পাবেন।
প্রায় সব মোবাইল ফোনের সঙ্গেই হেডফোন দেওয়া হয়। আই-পড বা অন্য কোনো এমপিথ্রি প্লেয়ারের সঙ্গেও হেডফোন পাওয়া যায়। আর হেডফোন কিনতে হলে বাজারে অনেক নামকরা ব্র্যান্ডের হেডফোন আছে। বাজেট বুঝে দেখেশুনে কিনে নিলেই হলো।
তার ছাড়া ব্লুটুথ হেডফোনও ব্যবহার করেন অনেকে। বাসায় বড় আকৃতির হেডফোন ব্যবহার করলেও, চলতি পথে হেডফোন যত ছোট হয়, ততই ভালো।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.