ফাঁসির আদেশ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ফাঁসির রায় দিয়েছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় ঘোষণা করেছেন। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে ৪র্থ রায়।
দীর্ঘ অভিযোগ পত্র পাঠ ও অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সাপেক্ষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ( ট্রাইব্যুনাল-২) এই রায় ঘোষণা করেন।
১,২,৩,৪ ও ৭ নম্বর অভিযোগে সম্পৃক্ততা ও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। তবে ৫ ও ৭ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
৪ জুন ২০১২ এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৫ই জুলাই শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এ বছরের ১৬ই এপ্রিলে শেষ হয় যুক্তি তর্ক উপস্থাপন। কামারুজ্জামনের বিরুদ্ধে মোট ৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলীরা জানান, একাত্তরে কামারুজ্জামান ময়মনসিংহসহ সারা দেশে আলবদর বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। সোহাগপুরে অন্তত ২০০ নিরীহ মানুষকে হত্যা ছাড়াও ধর্ষণসহ আরো বেশ কিছু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামনকে নিরাপদে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। পরে আজ সকালে বিশেষ প্রহরায় আদালতে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বরসহ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা কামারুজ্জামান। শেরপুর ডাকবাংলোয় বসে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সন্দেহভাজনসহ নিরীহ বাঙালিদের ধরে আনার নির্দেশ দিতেন এবং হত্যা, নির্যাতন চালাতেন তিনি।
সব মিলিয়ে গণহত্যা, গণহত্যা সংঘটনে ষড়যন্ত্র, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যা, ব্যাপক নির্যাতনযজ্ঞ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্মগত ও রাজনৈতিক কারণে ক্রমাগত নির্যাতনের সুপিরিয়র হিসেবে সব অপরাধের একক ও যৌথ দায় কামারুজ্জামানের ওপর বর্তায় বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
দেশে এই রায়ে আনন্দের পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও সৃষ্টি হয়েছে।এদিকে রায় পরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কায় সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।