চুয়াডাঙ্গায় বারি জাতের মুগ আবাদ বৃদ্ধি
চুয়াডাঙ্গাঃ চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রামে বারি- ৫ ও ৬ জাতের মুগ চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুন আবাদ হয়েছে। এ আবাদ করে চাষিরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে তেমনি মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আবাদে সহায়তা করছে কৃষি অধিদপ্তর ও মুজিবনগর উপজেলা সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প। তারা ইতিমধ্যে চাষিদের বিভিন্ন সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত বছর মুগ চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে চলতি বছর আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৮২৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ১০০ হেক্টর, দামুড়হুদা ৩৬৫ হেক্টর, জীবননগর ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। চাষীরা ইতিমধ্যেই মুগ তোলা শুরু করেছে। মুগের ব্যাপক চাহিদা ও মুল্য থাকায় চাষীরা আর্থিকভাবে ভাল লাভ করতে পারছে। বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মন পর্যন্ত ফলন হচ্ছে এ বছরে। বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দরে। চাষীরা যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি গ্রামের দরিদ্র মহিলা শ্রমিকরা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। একজন শ্রমিক প্রতি দিন ১০০-২০০ টাকা মুজুরী পাচ্ছে। দামুড়হুদা উপজেলা সদরের বেগোপাড়ার মনিরুল আলম মুকুল জানান তিনি এবছর প্রায় ২ বিঘা জমিতে বারি-৬ জাতের মুগ আবাদ করেছে। বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও তিনি খরচ বাদে ১০-১২ হাজার টাকা লাভবান হবেন। দেউলী গ্রামের চাষী ইয়াছিন আলী জানান তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে ১ বিঘা ৫ কাঠা জমিতে মুগের আবাদ করেছেন। তিনি খরচ বাদে ৭ হাজার টাকা লাভ করবেন। কৃষি কর্মকর্তা কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান বারি মুগ অসময়ে আবাদ হয়ে থাকে। মুগ আবাদের পরে ওই জমিতে অন্যান্য ফসল ভাল হয়। । মুগ গাছ জমিতে জৈব সার হিসাবে ব্যবহার হয় এতে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। মুগ একটি লাভজনক ফসল এবং বিভিন্ন খাদ্য শিল্পে কাঁচা মাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। মুগ বিক্রিতে চাষীদের কোন হয়রানী হতে হয় না। ডালের ঘাটতি পূরণে লাভজনক এ ফসল আবাদ করার জন্য চাষীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি সব চাষীকে এ আবাদ করার পরামর্শ দেন। এক সময় এ জেলায় ব্যাপক হারে দেশী মুগের আবাদ হলেও জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে এ আবাদ বিলুপ্ত হতে বসে। পরবর্তীতে উন্নত জাতের এ মুগের আবাদ শুরু হলে চাষীরা আবার দিনে দিনে মুগ চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে।