আপনি কি রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজছেন…?
রাগ হল মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। রাগ মানুষকে সুষমা বঞ্চিত করে। সবসময়ই রেগে থাকেন, এমন ধরণের লোকের দেখা এই দুনিয়ায় প্রায়ই পাওয়া যায়। আর হুট করেই অনেক রেগে যান, এমন লোকের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। রাগের জন্যই মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে। রাগ মানুষকে তার আপনজনের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়। সুন্দরকে মুহূর্তের মধ্যে কুৎসিত করে তুলবার জন্য রাগ হল সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
আগে আমাদের জানতে হবে রাগ কি ?
রাগ হল অতিসহজ এবং স্বাভাবিক একটি আবেগ, যা হাসি-কান্নার মতোই সত্য। অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু হরমোন রাগ প্রকাশের সঙ্গে জড়িত। রাগের সময় মানুষের মাঝে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন দেখা যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি ও রক্তচাপ বেড়ে যায়, এড্রিনালিন এবং নরএড্রিনালিন হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়।
তাই চলার পথে আমাদের রেগে গেলে চলবে না। কথায় আছে, “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।” রাগকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই মানুষ রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে যার চর্চা করলে আমরা সহজেই রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব-
☆ অযথা রাগ না করে মাথা ঠান্ডা রাখুন। রাগের বশে মাথা গরম করে কিছু করে বসবেন না।
☆ রাগের সময় মনকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। হাসি ঠাট্টা করে মনকে অনেকটা হালকা করা যায়।
☆ নিজেকে নিয়ে বেশি হিসাব করতে গেলে রাগ আরও বাড়বে। তাই তাত্ক্ষণিক ব্যাপারটা মেনে নিন। সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
☆ রাগের কারণটি থেকে নিজের মনকে অন্যদিকে সরিয়ে নিন। এক থেকে দশ পর্যন্ত উল্টো করে গুনতে শুরু করুন। তাহলে আপনার অজান্তেই মস্তিস্ককে কিছুটা অন্যদিকে ব্যস্ত রাখা যাবে।
☆ কেউ রাগিয়ে দেওয়ার চেষ্ঠা করলে সঙ্গে সঙ্গে তার জবাব না দেওয়ার চেষ্ঠা করা উচিত।
☆ বেশি রাগের ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনে ঘটনাস্থল থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে চলে যান।
☆ রাগের লাগাম হিসেবে যুক্তির বিকল্প নেই, কারও ওপর বা কোনো ঘটনার ওপর রাগ করলে ভেবে দেখুন ঘটনাটি কেন ঘটেছে, আপনার রাগ করার যথার্থ কারণ থাকলেও নানামুখী যুক্তির প্রয়োগে আপনি সেই কারণটিকে একপাশে সরিয়ে রাখতে পারেন।
☆ শারীরিক ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
☆ রাগের অবস্থায় হঠাৎ করেই কোন কথা বা কাজ করে বসবেন না। কোন কিছু করার আগে তা ভেবে দেখুন। কাজটি ঠিক করছেন কি না।
☆ রাগ মানুষের মুখের ভাষাগত সৌন্দর্য নষ্ট করে। রাগের সময় কথা বাড়ালে অযথাই কথা বাড়বে। তাই রাগের সময় যতটা সম্ভব কথা কম বলার চেষ্টা করুন।
☆ সমস্যা যেমন আছে, তার সমাধান ও আছে। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে থাকুন।
☆ রাগের কোনো বিষয়কে কেবল নিজের দিক থেকে না দেখে অপর পক্ষের দিক থেকেও দেখার চেষ্টা করুন।
☆ আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে ভাল করে দেখুন এবং রাগের কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
☆ নিজেকে যতটা পারা যায় টেনশন মুক্ত রাখুন। তবে টেনশন কমানোর জন্য ধূমপান করা মোটেও ঠিক নয়। তাতে মনটা আরও বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
☆ রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার সব থেকে ভাল কৌশল হল মেডিটেশন।
☆ নিজেকে ‘শান্ত হও’, ‘ধৈর্য ধর’ বলে কমান্ড করতে থাকবেন।