স্মৃতিকে দীর্ঘমেয়াদি করতে কয়েকটি কৌশল
মন্ট্রিল-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাসবাড’-এর গবেষকরা মস্তিষ্কের স্মৃতি জমিয়ে রাখার কাজটিকে আরো সহজ করার প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর পরীক্ষায় তারা কঠিন পর্তুগিজ ভাষাকে সহজে শেখার প্রমাণও পেয়েছেন। সেখানকার এক স্প্যানিশ এবং ইংলিশ ভাষাবিদ বলেন, পর্তুগিজ ভাষা বেশ কঠিন শিক্ষার্থীদের কাছে। কিন্তু বিশেষ পদ্ধতিতে অনেক কঠিন শব্দই সহজে মনে রাখা যায়। ক্যালিফোর্নিয়ার নিউরোলজিস্ট ড. জুডি ইউ্লিস বলেন, পরিচিত কোনো বিষয়ের সঙ্গে এলোমেলো বিষয়গুলোকে তুলনা করা হলে তা সহজে স্মৃতিতে রাখা যাবে। তাই কোনো শব্দ বা বাক্য মনে রাখতে হলে তার সমার্থক অন্য কোনো শব্দের মাধ্যমে তা মনে রাখাটা সহজ হয়। মূলত মস্তিষ্কে বৈচিত্র্যময় কাজের সমন্বয় ঘটিয়ে অনেক কঠিন বিষয়কে সহজ করা যায়। এর মাধ্যমেই কঠিন কিছুকে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিতে পরিণত করা যায়। তিনটি ধাপের মাধ্যমে নতুন তথ্যকে সহজে বুঝতে পারা যায়। এগুলো দেখে নিন। ১. প্রতীকায়িতকরণ : ডায়াগ্রাম, ফ্লো চার্ট এবং পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তথ্যগুলো সংরক্ষণ করুন এবং দেখুন। প্রেজেন্টেশনের আকারে এসব তথ্য মনে গেঁথে নিন। এই বিশেষ পদ্ধতিতে যখন তথ্য দেখছেন তখন তা আরো কার্যকরভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যাচ্ছে। গুগলের প্রোগ্রামিং দল এই পদ্ধতিতে কাজ করেন। ২. শ্রেণিবিভক্তকরণ : এবার ভাবুন সবচেয়ে তথ্যবহুল অংশের সঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের জীবনের কোনো অংশের মিল রয়েছে কিনা। এই তথ্য নিয়ে ‘কী বলতে চাইছে’ এবং ‘এর
সঙ্গে আমার সংযোগ কোথায়’ ইত্যাদি প্রশ্ন করুন। ৩. সমন্বয়সাধন : অপরিচিত কয়েক রকম তথ্য থাকলে এক ধরনের তথ্যগুলো আলাদা করে একটি বিভাগ করুন। কয়েকটি বিভাগ এক হয়ে একটি পুরো ছবি তৈরি করবে। নতুন তথ্য এভাবে সাজিয়ে মনে ধারণ করার চেষ্টা করুন। এবার দেখুন কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে চর্চাই আপনাকে নিখুঁত করে তুলবে। স্মৃতিতে যা রেখেছেন, বাস্তব জীবনে যত তার প্রয়োগ ঘটাবেন, তা ততই গভীরে প্রোথিত হতে থাকবে। স্মৃতিকে চিরজীবনের জন্য ধরে রাখতে এখানে ৫টি পন্থা শিখে নিন। ১. ঘুম ও মেডিটেশন : ঘুমের আদর্শ একটি চক্র মেনে চলতে হবে। ঘুমাতে যাওয়া বা ঘুম থেকে ওঠার জন্য অ্যালার্মের ব্যবস্থা করুন। সেই সঙ্গে হালকা মেডিটেশন চালিয়ে যান। সুস্থ মস্তিষ্ক সুষ্ঠুভাবে কাজ করে। ২. রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি : ব্যায়াম এবং হাঁটাহাটির মাধ্যমে দেহে রক্তপ্রবাহ মাত্রা বাড়ান। এতে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ৩. স্বাস্থ্যকর খাবার : ভালো খাবার খান। সকালের নাস্তাকে গুরুত্ব দিন। সকালের নাস্তা সরাসরি মস্তিষ্কের কাজে লাগে। স্বাস্থ্যকর খাবার আদর্শ বিপাক ক্রিয়া ঘটায়। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপাদান পাবেন। ৪. চিত্ত বিনোদন : গান শুনুন, সিনেমা দেখুন এবং মজা করুন। এসব কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কোনো স্মৃতি মনে পড়ে যাবে যা বহুদিন আগে সঞ্চয় করে রেখেছিলেন। ৫. নোট লেখা : যা মনে ধরে রাখতে চাইছেন তা লিখুন। লেখার সময় নির্দিষ্ট তথ্যগুলো গভীরভাবে মস্তিষ্কে কাজ করে এবং তা মুখস্থ হয়ে যায়। এতে তথ্য দীর্ঘদিনের জন্য স্থান করে নেয় মস্তিষ্কে। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার