Published On: Sat, Jul 27th, 2013

শাহবাগে `ইতিহাসের পোট্রেট’

Share This
Tags

1469

নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে শাহবাগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে, যেখানে স্বাধীনতা যুদ্ধের পাশাপাশি উঠে এসেছে গণআন্দোলনের ইতিহাস।

 

 

 

শুক্রবার বিকাল ৪টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী ও আলোকচিত্রী শহীদুল আলম।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ মঞ্চের অন্য সংগঠকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিকাল ৩টায় প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশি বাধার কারণে তা এক ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই সাধারণ মানুষ প্রদর্শনীর স্থানে ভিড় করে। লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবীরকেও প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে দেখা যায়।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন আলোকচিত্রীর তোলা ছবি স্থান পেয়েছে এ প্রদর্শনীতে। ‘ইতিহাসের পোট্রেট’ নামের এই প্রদর্শনী আয়োজনে সহযোগিতা করছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও দৃক।

প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত  দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত।

আলোকচিত্রী রশীদ তালুকদার, জালালউদ্দিন হায়দার, মোহাম্মদ শফি, ডেভিড বার্নেট, কিশোর পারেখ, বাল কৃষ্ণান, মার্ক গডফ্রে প্রমুখের ছবি এই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর সুলতানা কামাল বলেন, “আলোকচিত্র এমন একটি মাধ্যম যাতে ইতিহাস পুনর্বাসিত হয়, যেখান থেকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাস পুনর্জাগরিত হয়। এই প্রদর্শনী নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাসকে বাস্তবিকভাবে তুলে ধরবে। এটা বইয়ের বাইরের আরেকটি মাধ্যম। এই মাধ্যমে মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে চিনে নেবে।”

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পাশাপাশি এই প্রদর্শনী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মকেও তাদের পরিচিত সময়ের কথা মনে করিয়ে দেবে।

পুলিশের বাধার কারণে প্রদর্শনী শুরুতে দেরি হয়েছে জানিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “সকাল থেকেই প্রদর্শনীর জন্য এখানে প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছিলো। দুপুরে আমাদের কর্মীরা নামাজ পড়তে যায়। এর ফাঁকে শাহবাগ পুলিশ এসে আমাদের প্যান্ডেলের অনেক কিছু খুলে ফেলে।”

তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে জানালেও শাহবাগ থানা পুলিশ এতে বাধা দেয়। অবশ্য এক পর্যায়ে তারা চলে যায়।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল বলেন, “রাস্তায় কর্মসূচি না করতে আমরা তাদের বলতে গিয়েছিলাম। মানুষের চলাচলের পথে অনুষ্ঠান করতে আমরা তাদের বারণ করি। তবে আমরা তাদের কর্মসূচিতে কোন বাধা দিইনি।”

পুলিশি বাধার প্রতিবাদে কর্মসূচি দুই দিন বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে ইমরান বলেন, আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে।

যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে অবস্থান শুরু করে ছাত্র-জনতা। পরে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এই অবস্থান পরিচিত হয় গণজাগরণ মঞ্চ নামে।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে টানা অবস্থানের ইতি ঘটে। এরপরেও যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে তারা।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.