মার্চেন্ট ব্যাংক ও হাউজগুলোর শঙ্কা কাটছে
শেয়ার বাজারের প্রায় দু’মাসের উর্ধ্বমুখী আচরণে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। বাজারের চাঙ্গা ভাবের কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় শঙ্কা কাটতে শুরু করেছে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর।বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে শেয়ার বাজারের উর্ধ্বমুখীতার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনে পরিমান। গত প্রায় দু’মাসে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমান ৫’শ কোটি ছাড়িয়েছে। যা দু’শ কোটিতে নেমে এসেছিল। ফলে শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছি। অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে আনুসাঙ্গিক খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে বর্তমানে সে পরিস্থিতি অনেকটাই কেটে গেছে বলে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে একটি সিকিউরিটিজ হাউজের অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ধসের আগে বেতন ১-৫ তারিখের মধ্যে দেয়া হতো। কিন্তু বিগত প্রায় দু বছর ধরে ঠিকমত বেতন-ভাতা পাইনা। গতমাসে বেতন পেয়েছি ১৮ তারিখে। গত প্রায় দু’বছর ধরে এ ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছি। হাউজ কর্তৃপক্ষেরও এখানে কিছুই করার নেই। লেনদেন না বাড়লে তারা আমাদের কোথা থেকে টাকা দেবে? সম্প্রতি বাজার একটু স্বাভাবিক হলেও পুনরায় লেনদেন কমে গেছে। এখন বাজারের মন্দাবস্থা স্থায়ীভাবে না কাটলে ভবিষ্যতে কি হবে তা নিয়ে ভীষণ দুঃশ্চিন্তায় দিন পার করতে হয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের বাজার আচরণ কিছুটা স্বস্থি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে এক ব্রোকরেজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাজারে লেনদেন কম হচ্ছিল। এতে আমাদের আয় অনেক কমে গিয়েছিল। কারণ, বিও হিসাবের ওপর বার্ষিক ফি ছাড়া লেনদেনের ওপর নির্দিষ্ট হারে কমিশনই ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মূল আয়। সম্প্রতি বাজারের লেনদেন কিছুটা বাড়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়িক অবস্থার পরিবর্তন আসছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা কাটতে শুরু করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১০ সালে পুঁজিবাজারের ব্যাপকহারে সূচক, লেনদেন ও বিও হিসাব বৃদ্ধি পায়। সে সময় ডিএসই’র দৈনিক লেনদেন বেড়ে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা পেরিয়ে যায়। ধারাবাহিকভাবে লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়াতে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ করে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থাপন করা হয় ব্রোকারেজ হাউজের শাখা। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন বিভাগে নতুন লোকবল নিয়োগ দেয়। সে সময় গড়ে প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু গেল সপ্তাহের হিসাব মতে, ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হচ্ছে ২২৮ কোটি টাকার মধ্যে। এর ফলে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের দৈনন্দিন লেনদেনও কমে গিয়েছে।