ব্রাজিল ব্রাজিলের মতোই খেলল
এই ব্রাজিল আর সেই ব্রাজিল নেই! পেলে থেকে শুরু করে জিকো—সবাই বলছিলেন কথাটা। তবে কনফেডারেশনস কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই কথাটা মিথ্যে প্রমাণ করলেন নেইমাররা। গত রাতে জাপানকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রমাণ করলেন, হ্যাটট্রিক শিরোপাটা ব্রাজিলের প্রাপ্য।
উদ্বোধনী ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগেই স্টেডিয়ামের বাইরে ঘটে যায় লঙ্কাকাণ্ড। বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়াম প্রস্তুত করতে বেশি অর্থ খরচ করে ফেলেছে ব্রাজিল—এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদমুখর হয়ে হয়ে ওঠেন প্রায় ৫০০ ব্রাজিলীয় ভক্ত। প্রতিবাদকারীরা একপর্যায়ে এতটাই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন যে রাবার বুলেট ছুড়তে বাধ্য হয় দাঙ্গা পুলিশ। ছোড়া হয় মুহুর্মুহু টিয়ারশেল। পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন মাঠে উপস্থিত ৬৭ হাজার দর্শক। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ ঘটনায় আহত হয় ৩০ জনের বেশি। ঘটনাস্থল থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ম্যাচের আগে ঘটে যাওয়া লঙ্কাকাণ্ড অবশ্য ব্রাজিল-জাপানের মাঠের লড়াইয়ে প্রভাব ফেলেনি। টিয়ারশেলের ঝাঁজে কিছুক্ষণ আগেও যে দর্শকদের চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়েছে, ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই আনন্দে মাতোয়ারা হন তাঁরাও। সেই আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করেন ক্লাব ও দেশের হয়ে টানা নয় ম্যাচ গোলবঞ্চিত থাকা নেইমার। খেলার তিন মিনিট যেতে না যেতেই এগিয়ে দেন ব্রাজিলকে। পেনাল্টি বক্সের সামান্য বাইরে সতীর্থ ফ্রেডের কাছ থেকে বল পেয়েছিলেন ব্রাজিলীয় এই ফরোয়ার্ড। একদম সময় নষ্ট করেননি। ডান পায়ের জোরালো শটে বল জড়িয়ে দেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন জাপানের জালে। প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি জোরালো আক্রমণ চালায় ব্রাজিল। কিন্তু এর কোনোটাই কাজে লাগেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ব্রাজিলকে। তিন মিনিটের মধ্যেই দানি আলভেজের সহায়তায় গোল পেয়ে যান পলিনহো। ‘তিন’ সংখ্যাটা ব্রাজিলের জন্য গত রাতে যে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছিল, তার প্রমাণ পাওয়া গেল ম্যাচের শেষের দিকেও। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে অস্কারের সহায়তায় স্কোরলাইন ৩-০ করেন স্ট্রাইকার জো।
টুর্নামেন্টের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। চ্যাম্পিয়ন সর্বশেষ দুই আসরেই। গত বার, ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা টুর্নামেন্টের ফাইনালে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে সেলেসাওরা।