Published On: Sun, Jul 7th, 2013

বাংলাদেশ এখনো স্বাধীন হয়নি

Share This
Tags

chainsপ্রশাসন ব্যবস্থা দেখে মনে হয় দেশটা এখনো স্বাধীন হয়নি। এখনো দেশ ব্রিটিশ মডেলে চলে। পূরণ হয়নি স্বাধীনতার স্বপ্ন। ১৯৭১-এর ২৭ মার্চ থেকে মেজর জিয়াউর রহমান তিনবার স্বাধীনতার বেতার ঘোষণা দিয়েছেন। বেতার ঘোষকের তালিকায় জিয়া নবম ঘোষক হলেও মর্যাদার দিক থেকে তার অবস্থান ছিল শীর্ষে। কেননা আমরা তখন যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলাম, পাকিস্তানি আর্মি দ্বারা আক্রান্ত ছিলাম। বেঘোরে মারা যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। বঙ্গবন্ধুর দলেও যে আর্মি আছে তা জিয়ার ঘোষণার মধ্যে দিয়েই মানুষ বুঝতে পারে। জনগণের মনোবল বাড়াবার জন্য জিয়ার ঘোষণা দরকারি ছিল। তবে তা ছিল আকস্মিক। আমরা কেউ তৈরি হয়ে সেই দিন জিয়াকে আনতে যায়নি। কিংবা জিয়াও আসবেন বলে তৈরি ছিলেন না। আমি সেই দিন (১৯৭১-এর ২৭ মার্চ ) দুপুর ১২ থেকে ১টার মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ার একটি স্কুল মাঠে অবস্থানরত জিয়াকে আনতে গিয়ে ছিলাম। তাকে আমি বেতার কেন্দ্রে এসে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের প্রস্তাব করি।

‘জিয়াকে সেই দিন বলেছিলাম আমরা যারা বেতার কেন্দ্রে রয়েছি, আমরা মাইনর, আপনি মেজর। এই বলে জিয়াকে বেতার কেন্দ্রে ঘোষণা দিতে সম্মত করেছিলাম। তবে এর আগে ২৬ মার্চে আমিসহ আরও আটজন স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তারা হলেন_ আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, আবদুল্লাহ আল ফারুক, এম এ হান্নান, কবি আবদুস ছালাম, ডা. সুলতানুল আলম, মাহমুদ হোসেন ও কাজী হাবিব উদ্দিন। এদের কেউ কেউ সরাসরি বঙ্গবন্ধুর তার বার্তাটি আবার কেউ সেটির ভিত্তিতে বক্তব্য দিয়েছিলেন।’

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে উদ্বোধনী অধিবেশনটি শুরু হয় ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। ২৭ মার্চ দুপুরে জিয়াকে প্রস্তাব দিয়ে শহরে আনার পথে অন্তত ১০টি পয়েন্টে জড়ো হয়ে থাকা লোকজনকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে হয়। এ সময় লোকজনকে কর্মস্থলে ফিরে যেতে আহ্বান জানান জিয়া। তিনি (জিয়া) তখন বলছিলেন, উর্দুতে যারা কথা বলে তারা সবাই আমাদের দুষমন। দুই-তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলেও উদ্বিগ্ন লোকজনকে আশ্বস্ত করছিলেন জিয়া।
‘২৮ মার্চ দুপুরে এবং ২৯ মার্চ শেষ বারের মতো জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন। ২৮ তারিখের ড্রাফটিতে নিজেকে ‘প্রফেশনাল হেড এবং চিফ অব বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মি’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিদেশিদের কাছে সাহায্য চাওয়ার কথা বলা হয়। বোধ করি ড্রাফটি তৎকালীন ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভুঁইয়াই লিখেছিলেন। জিয়া নিজেকে ওই পরিচয় দেবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাকে বুঝানো হয়, সাহায্য চাইতে হলে এমন পরিচয় দিতেই হবে। এমন অবস্থায় জিয়া বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে জানতে চাইলে আমি বলি_ আপনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষের হয়ে তা বলতে পারেন। ২৯ মার্চ যে ড্রাফটি জিয়া পাঠ করেন সেটি শিল্পপতি ও তৎকালীন আওয়ামী লীগের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক একে খান সাহেব লিখে দিয়েছেন বলে কাছের চাঁদগাঁওয়ের বাসিন্দ ওসমান গণি আমাকে জানিয়েছিলেন এবং সেই ঘোষণার একটি টেপ রেকর্ডের একটি ক্যাসেটও তিনি ১৯৭২ সালে আমি যখন বেতারের ডেপুটি পরিচালক ছিলাম তখন আমাকে দেন। যা পরবর্তীতে বহুল প্রচারিত হয়।

‘৭১-এর এ ভৌগোলিক ও পতাকা সর্বস্ব স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই নতুন মানচিত্র পেয়েছি। এর আগে বাঙালির প্রেরণার জন্য সিরাজউদ্দৌলাকে স্বাধীন নবাব হিসেবে বলা হলেও বাস্তবে তিনি বাঙালি ছিলেন না, তিনিও ছিলেন উর্দুভাষী। স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রাম বলতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামের মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বে ইংরেজদের অস্ত্রাগার অভিযানকেই বলা যায়

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.