ফাইনালে ব্রাজিল
কনফেডারেশন কাপে হ্যাটট্রিকের পথে ব্রাজিল। ফিফা কনফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে ২-১ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। সামনে শুধু ফাইনাল। আর এক জয় পেলেই কনফেডারেশন কাপে হ্যাটট্রিক শিরোপার মুকুট পাবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
শুরু থেকেই নান্দনিক খেলা উপহার দিতে সক্ষম হয় ব্রাজিল। সেমিতে ১৪ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত উরুগুয়ে।
তাদের সামনে সে সুযোগ এসেছিল। পেনাল্টি থেকেও গোল বঞ্চিত হয় উরুগুয়ে। শরু হয় পাল্টা আক্রমণ। ৪০ মিনিটে নেইমারের দর্শনীয় পাস থেকে প্রতিপক্ষের জালে প্রথম বল জড়াতে সক্ষম হন ব্রাজিলের ফ্রেড।
এর আগে বিধি বর্হিভূতভাবে বাঁধা দেওয়া দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে দু’দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে খেলায় কিছুটা ছন্দ পতন হয়। দুই যাত্রায় হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন রেফারি।
১-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে ব্রাজিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ২ মিনিটের মাথায় হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। কাভানির গোলে খেলায় সমতা আনে উরুগুয়ে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা। ৮৮ মিনিটে নেইমারের কর্নার কিকে মাথা লাগিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন পলিনিয়ো। এসময় খেলোয়াড়রা দর্শক গ্যালারিতে গিয়ে সতীর্থ খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেচে গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।
শেষ মুহূর্তে সমতা আনতে প্রাণপন চেষ্টা চালালেও বেলো হরিজন্তেতোর মাটি হতাশ করেছে উরুগুয়েকে। চোখের জলেই বিদায় নিতে হয় দলটিকে। ‘এ’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ব্রাজিল ও ‘বি’ গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় উরুগুয়ে।
আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন ও ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ ইতালি। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের বিজয়ী দল ৩০ জুন রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ব্রাজিলের।
টানা তিন ম্যাচ জিতে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছিল নেইমাররা। শেষ চারের পথে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন জাপান, উত্তর আমেরিকা সেরা মেক্সিকো ও ইউরো রানার্সআপ ইতালিকে পরাস্ত করে।
সেমিতে হট ফেবারিট ব্রাজিলকে ৬৩ বছর আগের স্মৃতি তাড়া করে ফিরছিল। ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো নিজ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল ব্রাজিল। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করতে শেষ ম্যাচে ড্র’ই যথেষ্ট ছিল দেশটির। কিন্তু ১৬ জুলাই উরুগুয়ের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল।
ওই বছর উৎসবের সব রকম প্রস্তুতি নিয়েই শেষ ম্যাচে মাঠে নামে ব্রাজিল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৪৭ মিনিটে ফ্রেইকোর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এতে উল্লাসে ফেটে পড়েছিল ব্রাজিলিয়ানরা। ৬৬ মিনিটে উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড জুয়ান আলবার্তো শিয়াফোনি সমতা ফেরান। এরপরও সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু খেলার ৮০ মিনিটে ব্রাজিলিয়ানদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেন ঘিগিয়া। গোটা গ্যালারি শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবারের ম্যাচের আগে ব্রাজিল-উরুগুয়ে দেখা হয়েছে ৭০ বার। এরমধ্যে ব্রাজিল জিতেছে ৩২টিতে আর উরুগুয়ে ১৯টিতে। ব্রাজিল গোল পেয়েছে ১২৫টি আর উরুগুয়ে ৯০টি। সর্বশেষ উরুগুয়ে জিতেছে ১২ বছর আগে ২০০১ সালে।