কফি পান সময় অসময় করা যাবে না
প্রতিদিন সকালে এক কাপ কফি আমাদের জন্য সারাদিনের পেট্রোলের কাজ করে। আমাদের দিনের শুরুর ক্লান্তি, ম্যাজমেজে ভাব, বিষন্নতা সবকিছু দূর করতে ক্যাফেইন সমৃদ্ধ কফি বেশ কার্যকর। কিন্তু একদল গবেষক এবার সেই কফি খাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিলেন। তাদের দাবি, সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত কফি খেলে তা সাধারণ সময়ের চাইতে অনেক বেশি কার্যকর।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব দ্য হেলথ অ্যান্ড সাইন্স-এর স্নায়ুবিশেষজ্ঞ স্টিফেন মিলার দেহের ওপর ক্যাফেইনের প্রভাবের বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণা চালান।
তার ভাষ্যমতে, হরমনের কর্টিসল কম থাকাকালে ক্যাফেইনের কার্যকারিতা ভালো হয়। কারণ ক্যাফেইনের সাথে দেহের হরমনের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া হয়। সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত মানুষের দেহে কর্টিসলের স্তর অনেক উঁচুতে থাকে। ফলাফল হিসেবে ক্যাফেইন মানবদেহে কার্যকারিতা আনতে ব্যর্থ হয়। ঘুম থেকে ওঠের পরপরই মূলত মানবদেহে কর্টিসলের পরিমাণ বেশি থাকে।
কিন্তু দিনের কাজ শুরুর সাথে সাথে কর্টিসলের পরিমাণটা ধীরে ধীরে কমে আসে। আবার দুপুর থেকে বিকেলের দিকে গড়াতে থাকা দিনেও মানুষের কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়া ছয়টা পর্যন্ত ক্যাফেইন তার ক্লান্তি কাটানো প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়। দিনের শুরুতে কর্টিসলের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে। কারণ মানবদেহ যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর ধীরে ধীরে সতর্ক হতে থাকে তখনই কর্টিসল বৃদ্ধি পায়। তাই এ সময় কফি উপস্থিত ক্যাফেইন যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে না। স্বভাবতই প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি কফি পানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি।
সুতরাং যারা সকাল সকাল কফি খেতে আগ্রহী তাদের ভোরে ঘুম থেকে ওঠাটা বাঞ্ছনীয়। যত দেরি করে উঠবেন ততই কর্টিসলের মাত্রা দেরিতে কমবে। আর তখন কফিও কাজে দেবে না। ফলাফল পুরো দিনব্যাপী অবসাদকে সঙ্গী করা। তাই কফিপ্রেমে হলেও রোজ ভোরে উঠতে হবে।