Published On: Thu, May 23rd, 2013

উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অর্ধশতাধিক ছাত্রীর জামার হাতা কেটে দিলেন মন্ত্রীর স্ত্রী!

Share This
Tags

545559_509263949084731_77228558_nঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুলার রোডের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভাইস প্রিন্সিপাল ও শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর স্ত্রী মাহবুবা খানম কল্পনা শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক ছাত্রীর স্কুল ড্রেসের জামার ফুলহাতার অর্ধেকটা কেটে দিয়েছেন। এ সময় কাঁচিতে অনেকের হাতেও আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ফুলহাতা শার্ট পরে এসেছে- এমন অভিযোগ তুলে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহবুবা খানম কল্পনা কাঁচি দিয়ে ছেলেদের সামনেই মেয়েদের জামার হাতা কেটে দেন। এ সময় অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের শাস্তির দাবিতে তারা স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন। স্কুলের গভর্নিং বডি যদি আজকের মধ্যে তাদেরকে অপসারণ না করে, তাহলে বৃহস্পতিবার থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানান অভিভাবকরা।

অভিভাবক আব্দুল আলিম মিয়া বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগে কোনো ধরনের নোটিশ বা নির্দেশনা না দিয়ে এ কাজ করেছে। এ রকম স্বেচ্ছাচারি সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় কারণে হিজাব বা ফুলহাতা পরে আসতেই পারে। বাংলাদেশে এ ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ নয়। আমরা স্কুলের প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের পদত্যাগ দাবি করছি।

তিনি বলেন, মন্ত্রীর স্ত্রী হওয়ার দাপটে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল এ কর্মকান্ডের পাশাপশি এর আগেও অনেক স্বৈরাচারী কর্মকান্ড করেছেন।

অভিভাবক সায়মা সুমী জানান, ইভটিজিং প্রতিহত করার জন্য এতো প্রচেষ্টা চালানো হয়। আবার ফুলহাতা ড্রেস পরে এলেও তা কেটে দেয়া হবে, তাহলে ইভটিজিং কমবে কিভাবে? আমরা মেয়েদের শালীনতার কথা চিন্তা করে হিজাব ও ফুলহাতা শার্ট পরতে উৎসাহিত করি- সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধা দিচ্ছে!

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নওশিন বলেন, আমাদের আগে কখনো নোটিশ দেয়া হয়নি। ক্লাসে কখনো বলাও হয়নি। আমরা হিজাব পরিধান করি। কিন্তু এর সাথে শর্ট হাতা পরলে সবাই খারাপ ভাববে। তাই ফুলহাতা পরে আসি। কিন্তু ম্যাডামরা আমাদের কোনো ধরনের সুযোগ না দিয়ে সবার সামনে হাতা কেটে দিলেন।

আরেক অভিভাবক জহিরুল ইসলাম জানান, মুসলিম দেশে মেয়েরা ফুল হাতার পোশাক পরিধান করতেই পারে। যদি এটি তাদের পছন্দ না হয় তাহলে জিন্সের প্যান্ট এবং গেঞ্জি পরার নিয়ম করুক। তিনি মন্ত্রীর স্ত্রী বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন- এটা হতে পারে না। এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্তের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ড. উম্মে সালেমা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার নির্দেশে তাদের জামার হাতা কেটে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে আমি তাদের অনেকবার নিষেধ করেছি ফুলহাতা পরে আসতে। কিন্তু এরপরও তারা একই কর্মকান্ড করেছে। তাই স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল কাঁচি দিয়ে ফুলহাতা কেটে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, স্কুলের নিয়ম অনুসারে সবাইকে ড্রেস পরে স্কুলে আসতে হবে। এর বাইরে মেনে নেয়া হবে না। তবে কেউ যদি পর্দার কারণে ফুলহাতা শার্ট ও হিজাব পরে, তবে লিখিতভাবে জানাতে হবে।

উদয়ন স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহবুবা খানম কল্পনার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বারবার ফোন করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.