Published On: Wed, Jun 4th, 2014

আজ কি খেলেন ? ফরমালিন নাতো !!!

Share This
Tags

Ki-Khelen-Aj-বাজারে গিয়ে কানকো উঠিয়ে কিনছেন তাজা মাছটি ? ফলের দোকানে সুন্দর রং ও গন্ধ দেখে কিনে নিচ্ছেন মৌসুমি ফল ? কাপড়ে দেয়ার রং, ফরমালিন আর ঢ্যাঁড়সের রস মিলিয়ে মাছ কৃত্তিম ভাবে ‘তাজা’ হিসেবে বিক্রি করছে বিক্রেতারা যা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর।কাপড়ের রং ও ঢেঁড়সের আঠা দিয়ে রক্ত বানিয়ে মাছ তাজা দেখানো হচ্ছে। ঢেঁড়সের রস সাধারণত ট্যাংরা, বোয়াল এবং আয়েড় মাছে মেশানো হয়েছে। আর কাপড়ের রং মেশানো হয়েছে প্রতিটি বড় মাছের কানে, মুখে, লেজেসহ বিভিন্নস্থানে। যেখানে শূণ্য দশমিক এক মাত্রার বেশি ফরমালিন থাকলেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সেখানে আটক মাছগুলো থেকে দশমিক ৩৫ মাত্রা থেকে দশমিক ৬০ মাত্রার ফরমালিন পাওয়া যায় । ফলের দোকানে ফরমালিন যুক্ত আম ও লিচু পাওয়া গেছে। এই লিচুতে ৯ দশমিক ২০ মাত্রার ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। আমে পাওয়া গেছে ৭ দশমিক ৯৩ এবং জামরুলে দশমিক ৮২ মাত্রায় ফরমালিন। একদম তাজা ভেবে যা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন আসলে তাতে মেশানো হচ্ছে ভয়ংকর রকমের বিষ । সেই বিষ হল “ফরমালডিহাইড বা মিথান্যাল” এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ। বর্ণহীন ও দূর্গন্ধযুক্ত গ্যাস হিসেবে এর সবিশেষ পরিচিতি রয়েছে। এটি আগুনে জ্বলে এবং বিষাক্ত পদার্থবিশেষ। এর রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে CH2O। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ফরমালডিহাইড পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় সচরাচর এটি ফরমালিন নামে পরিচিত হয়ে থাকে।১৮৫৯ সালে রুশ রসায়নবিদ আলেকজান্দর বুতলারভ ফরমালিনের অস্তিত্ব তাঁর প্রতিবেদনে তুলে ধরেন। পরবর্তীতে ১৮৬৯ সালে অগাস্ট উইলহেম ভন হফমেন স্বার্থকভাবে চিহ্নিত করেন। ফরমালিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সংক্রমিত হতে না দেয়া। অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাককে মেরে ফেলতে পারে। ফর্মালিন সাধারনত টেক্সটাইল, প্লাষ্টিক, পেপার, রং, কনস্ট্রাকশন ও মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। দেখতে সাদা পাউডারের মত। পানিতে সহজেই দ্রবনীয়। শতকরা ৩০-৪০ ভাগ ফর্মালিনের জলীয় দ্রবনকে ফর্মালিন হিসাবে ধরা হয়। ফরমালিনের ক্ষতিসমূহ : চোখের রেটিনাকে আক্রান্ত করে রেটিনার কোষ ধ্বংস করে। ফলে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফরমালিন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, কারবাইডসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে পেটের পীড়া, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বদহজম, ডায়রিয়া, আলসার, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।ধীরে ধীরে এসব রাসায়নিক পদার্থ লিভার, কিডনি, হার্ট, ব্রেন সব কিছুুকে ধ্বংস করে দেয়। লিভার ও কিডনি অকেজো হয়ে যায়। casino হার্টকে দুর্বল করে দেয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়।ফরমালিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার ফলে পাকস্থলী, ফুসফুস ও শ্বাসনালিতে ক্যান্সার হতে পারে। অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হওয়ার ফলে রক্তশূন্যতাসহ অন্যান্য রক্তের রোগ, এমনকি ব্লাড ক্যান্সারও হতে পারে। ফরমালিন ফরমালডিহাইড ফরমিক এসিডে রূপান্তরিত হয়ে রক্তের এসিডিটি বাড়ায় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে। ফরমালিনযুক্ত দুধ, মাছ, ফলমূল এবং বিষাক্ত খাবার খেয়ে দিন দিন শিশুদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। কিডনি, লিভার ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট, বিকলাঙ্গতা, এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা। শিশুদের বুদ্ধিমত্তা দিন দিন কমছে।গর্ভবতী মেয়েদের ক্ষেত্রেও মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। সন্তান প্রসবের সময় জটিলতা, বাচ্চার জন্মগত দোষত্রুটি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হতে পারে। মাছ থেকে ফরমালিন দূর করার উপায় : ফরমালিনযুক্ত মাছের ফুলকা ধূসর, চোখ ঘোলাটে ও ফরমালনিরে গন্ধ পাওয়া যায় হয়,আঁইশ তুলনামূলক ধূসর র্বণরে হয় ,শরীরে আঁশটে গন্ধ কম পাওয়া যায়, দেহ তুলনামূলক শক্ত হয় । ফল ও সবজি থেকে ফরমালিন দূর করার উপায় : খাওয়ার আগে এক ঘণ্টা বা তার চেয়ে একটু বেশী সময় ফলগুলো পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।লিচু কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকার পর হয় ইটা লাল। এখন গাছে রাসায়নিক স্প্রে করে যার ফলে লিচু গাঁড় মেজেনটা রং ধারন করে তা বড়ই মনমুগ্ধকর।কখনোই গাঁড় মেজেনটা রঙ্গের লিচু কেনা যাবে না।সবজি রান্না করার আগে গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন।বেগুনে এক ধরনের রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করা হয় । এই রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার ক্ষতিকর না যদি নিয়মানুসারে দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশের কৃষকেরা এ ব্যাপারে অজ্ঞ। তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। প্রতিটি কীটনাশকের ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত থাকে। যেমন- একটি কীটনাশকের সেলফ লাইফ বা জীবন সীমা ৭দিন, তার মানে কীটনাশকটা ব্যবহারের ৭দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকবে, যা কীটপতঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। তাই কৃষকদের উচিত কীটনাশক ব্যবহারের অন্তত ৭দিন পর ফলন তোলা। কিন্তু তারা তা না করে ২-১ দিনের মাঝেই ফলন তোলেন। ফলে কীটনাশকের ক্রিয়া ক্ষমতা থেকে যায়, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে আমাদের উপর। তাই বাজারে সতেজ, উজ্জ্বল বেগুন না কিনে কিছুটা অনুজ্জ্বল, পোকায় কিছুটা আক্রান্ত এমন বেগুন কেনাই ভালো।

ডেস্ক রিপোর্ট – আদনান অনিন্দ্য ।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.