বিজয়ে শুরু বাংলাদেশ এর বিশ্বকাপ

আফগানদের হুমকি ধামকিতে কিছুই হলো না। চাপকে জয় করে বাংলাদেশ আধিপত্য রেখেই আফগানদের দিলো হারিয়ে। ক্যানবেরার মানুকা ওভালে বুধবার টাইগাররা জিতেছে ১০৫ রানে। ৪২.৫ ওভারে ১৬২ রানে অলআউট হয় আফগানরা।
আগে ব্যাট করে ইনিংসের শেষ বলে অল আউট হয় বাংলাদেশ। সাকিব ও মুশফিকের ফিফটির ওপর ভর করে তোলে ২৬৭ রান। তাতে আফগানদের সামনে ২৬৮ রানের জয়ের টার্গেট দাঁড়ায়। কিন্তু মাশরাফিদের আক্রমণে প্রথম ৩ ওভারে ৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানরা। ওই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি আফগানরা। বাংলাদেশের বোলিংয়ের কাছে এক পর্যায়ে গিয়ে আত্মসমর্পন করে আফগানিস্তান। ৭১ রান করে ম্যাচের সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি ৩ এবং সহ অধিনায়ক সাকিব নেন ২ উইকেট।
৩ উইকেট হারানোর পর নওরোজ মঙ্গল ও সামিউল্লা শেনওয়ারির মাঝে ৬২ রানের জুটি গড়ে ওঠে। আফগানদের দলীয় ৬৫ রানের সময় সেই জুটি ভাঙ্গেন মাহমুদুল্লা। নওরোজ ২৭ রান করে মাহমুদুল্লার শিকার হয়েছেন। আর দলের ৭৮ রানের সময় সামিউল্লা (৪২) রান আউট হয়ে ফিরে যান। সেরা ৫ উইকেট তুলে নেবার পর জয়ের সুবাসই পেতে শুরু করে বাংলাদেশ।
কিন্তু জয়টাকে দেরী করিয়ে দেওয়ার পণই বুঝি করেছিলেন আফগান অধিনায়ক নবী ও তার সতীর্থ ব্যাটসম্যান নাজিবুল্লা। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। সাকিব ১৭ রান করা নাজিবুল্লাকে ফিরিয়ে দিয়ে জুটি ভাঙ্গেন। পরের ওভারের প্রথম বলেই মাশরাফি তার তৃতীয় শিকার বানান নবীকে (৪৪)। এরপর আর কিছু করার থাকেনি আফগানদের।
বাংলাদেশের পক্ষে নতুন বলে প্রথম ওভারটি করেছেন মাশরাফি। আর ওভারের শেষ বলে জাভেদ আহমাদিকে তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়েছেন মাশরাফি। পরের ওভারটি ছিলো রুবেলের। আর বিশ্বকাপের আগে বিতর্কে পড়া এই পেসার প্রথম বলেই শিকার বানিয়েছেন আফসার জাজাইকে। এলবিডব্লু হয়েছেন জাজাই। পরের ওভারের শেষ বলে আবার হামলে পড়েন মাশরাফি। আসগার স্তানিকজাইকে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। ইনিংসের প্রথম তিন ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে থমকে যায় আফগানরা।
তার আগে টস জিতে আগে ব্যাট করে ১১৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। তারপর জুটি বাধেন মুশফিক ও সাকিব। ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রনের বেশিরভাগটাই আফগানদের হাতে চলে গিয়েছে। সেখান থেকে দলকে একটু একটু করে ম্যাচে ফেরান সাকিব ও মুশফিক। দুজনেই খুব সতর্ক হয়ে ব্যাট চালিয়েছেন। সুবিধামতো আক্রমণ চালিয়েছেন আফগানদের বোলিংয়ে। আফগানরা এদিন দারুণ বল করছে। পেসার থেকে স্পিনাররা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বাংলাদেশকে। কিন্তু মুশফিক ও সাকিব যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন তার বেশিরভাগটা ছিলো বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। বাকি সময়টা ছিলো আফগানদের খেলা।
৪৫তম ওভারে হামিদের বলে বোল্ড হয়েছেন সাকিব। বিপজ্জনক হয়ে উঠতে গিয়ে ওই ওভারে হামিদকে একটি চার ও একটি ছক্কাও মারেন সাকিব। ৫১ বলে ৬টি চার ও ১টি ঝক্কায় ৬৩ রান করে বিদায় নেন সাকিব। সাকিবের বিদায়ের পর কিছুক্ষণের মধ্যে সাব্বির রহমান (৩) ফিরে যান। আফগান অধিনায়ক এরপর তুলে নেন মুশফিককে। মুশফিক ৫৬ বলে ৭১ রান করেছেন। ৬টি চার ও ১টি ছক্কার মারে সাজানো তার ইনিংস। শেষ ৪ ওভারে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৫ উইকেট।
তার আগে ওপেন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও এনামুল হক। দুজনে ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন। কিন্তু অনেক বেশি ধীরে খেলেছেন তারা। ১৪.৩ ওভারে ৪৭ রান আসে। আর প্রথম ১০ ওভারে আসে ৩৮ রান। তামিম ১৯ রানের বিদায় নেন। ৫ রানের মধ্যে ফেরেন এনামুল (২৯)। এরপর সৌম্য ২৮ এবং মাহমুদুল্লা ২৮ রান করেন। ওই দুজনের মধ্যে ৫০ রানের জুটি হয়েছিলো। এবং তা কাজে এসেছে বাংলাদেশের।