Published On: Sun, Jul 13th, 2014

রোজায় নারীর বাড়তি কাজের চাপ

Share This
Tags

imagesরমজানে ইফতারি তৈরি, সেহরির আয়োজন, সবকিছু মিলিয়ে গৃহিণী এবং কর্মজীবী নারী উভয়েরই কাজের চাপ বেড়ে যায় অনেকখানি। সংসারের অন্য অনেক কাজ গৃহকর্মীর হাতে ছেড়ে দিলেও রান্নার কাজ নিজে করতেই ভালোবাসেন বেশির ভাগ নারী। সারা বছর ধরে এক ধরনের রুটিনে থাকা গৃহিণী কিংবা কর্মজীবী নারীর কাজের ধরনটাই ওলটপালট হয়ে যায় রোজার মাসে। গৃহিণীদের ক্ষেত্রে যেমন কাজের চাপ বাড়ে, কর্মজীবীর ক্ষেত্রেও তেমনি। কাজ যে কেবল ইফতারি তৈরিতেই, তা কিন্তু নয়। রমজানে ক্রমাগত দাম চড়তে থাকা বাজারসদাই সামলানো, অনেক ক্ষেত্রে নিজেরই বাজার করা। সেহরি, ইফতারের মেন্যু ঠিক করা, পরিবারের সবার পছন্দ-অপছন্দ, খাবারের পুষ্টিমান, বয়স্ক ও শিশুদের জন্য আলাদা কিছু করতে হলে সেটা তৈরি। সবকিছু মিলিয়েই কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সারা বছরই কর্মজীবী নারীর ব্যস্ততার শেষ নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে যুদ্ধ করে সব কাজ শেষ করে তবেই অফিসের উদ্দেশে বের হতে হয়। বিবাহিত কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে কাজের ফিরিস্তি আরও বড়। তারপর রাস্তার জ্যাম কাটিয়ে অফিসে পৌঁছতে রীতিমতো লড়াই করতে হয় সারা বছরই। রমজানে রাস্তায় জ্যাম বেড়ে যায় আরও বেশি। রান্নাবান্না, ইফতারি, সেহরির আয়োজন নিয়ে তাই দুশ্চিন্তার শেষ নেই নারীদের।  রমজানে ব্যাংকের কার্যক্রম সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। সকালে যেমন অফিসে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া থাকে, তেমনি থাকে বিকেলে অফিস থেকে ফেরার জন্য। ছুটির দিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে ইফতারি তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। রাস্তায় এত জ্যাম, মাঝে মাঝে বাসায় পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। রমজানে কাজের চাপ কীভাবে সামাল নারিরা বলেন দিন যদি ২৪ ঘণ্টার না হয়ে ৪৮ ঘণ্টার হতো, তাহলে সংসার আর অফিস দুই সামলানো অনেক সহজ হতো। কিন্তু দিন তো আর ২৪ ঘণ্টার বেশি হওয়ার সুযোগ নেই। তাই এই সময়ের মধ্যেই গুছিয়ে ফেলতে হবে সব কাজ। একা হাতে অল্প কাজও অনেক বেশি মনে হয়। তাই পরিবারের সবার সহযোগিতায় রমজানের ব্যস্ত দিনগুলোও হয়ে উঠতে পারে আনন্দময়।
শুধু ছুটির দিন ছাড়া বর্তমানের ব্যস্ত সময়ে বেশির ভাগ পরিবারেরই একত্র হওয়ার সুযোগ খুব কমই হয়। ইফতারে এই সুযোগ তৈরি হয়। সেই সঙ্গে থাকে বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্যের সমারোহ। বাড়িতে নারীরা সচেষ্ট থাকেন বলেই ইফতারির নানা আয়োজন করা সম্ভব হয়। তাই পরিবারের পুরুষ সদস্যরা অফিস থেকে ফিরেই হোক আর ঘরে থেকেই হোক, ঘরের মানুষটিকে সহযোগিতা করুন। রান্নার কাজে, টেবিল সাজিয়ে ইফতারি পরিবেশনে, বাজারসদাই আর সেহরি-ইফতারের মেন্যু সামলানো নিয়ে কথা বলে, কাজ ভাগ করে নিয়ে সাহায্য করুন। মাঝে মাঝে সম্ভব হলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাইরে ইফতার করতে পারেন। এতে এক দিন ছুটিও মিলবে, ইফতারেও আসবে নতুনত্ব। ব্যস্ত জীবন থেকে এই একটু ছুটি—নারী-পুরুষ উভয়েরই কর্মস্পৃহা বাড়িয়ে দিতে পারে।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.