মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা

সন্তানের জন্মের কথা না জেনেই বাসচাপায় চিরবিদায় নিলেন হতভাগ্য বাবা মো. আনোয়ারুল ইসলাম। বাবার জানাজার প্রস্তুতি যখন চলছে। ঠিক তখনই দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলছে স্ত্রীর সন্তান প্রসবের জন্য সিজার।
এমন নির্মম ঘটনা ঘটে দিনাজপুর-পঞ্চগড় সড়কের মাকড়াই শালবাগান এলাকায়। নিহত আনোয়ারুল উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।
সোমবার সকাল ১০টায় স্ত্রীর সিজার তাই ২৫হাজার টাকা নিয়ে দিনাজপুরের উদ্যেশ্যে সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান তিনি। হৃদয়ে আনন্দের দোলা পরিবারে আসছে নতুন অতিথি। তাই তো বাধ ভাঙা উল্লাস নিয়ে স্ত্রীর কাছে ছুটে যাওয়া যে শেষ বিদায় হবে তার জানা ছিল না।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বীরগঞ্জ পৌর শহরের দিনাজপুর-পঞ্চগড় সড়কের মাকড়াই শালবাগান এলাকার জেলখানার মোড়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন মো. আনোয়ারুল ইসলাম (২৭) ও প্রতিবেশী হেলাল উদ্দীন (২৯)।
এ দিকে পরিবারের লোকজন মো. আনোয়ারুল ইসলাম লাশ উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। বিকালে হয় জানাজা। হাসপাতালে থেকে সংবাদ আসে আনোয়ারুলের স্ত্রী সেরিনা বেগমের কোল জুড়ে এসেছে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান। জানাজা প্রক্কালে এ সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। আবেগতাড়িত হয়ে কান্নায় চোখের জলে বুক ভাসিছেন উপস্থিত অনেক মুসল্লি। কন্যার কথা না জেনে বিদায় নিলেন বাবা।
অন্যদিকে হাসপাতলে বিছানায় শুয়ে স্ত্রী বার বার না আসার বিষয়টি জানতে চাইলেও তাকে জানানো যায়নি স্বামী চিরবিদায়ের কথা।
ঘটনার এমন বিবরণ দিতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠেন নিহত আনোয়ারুল ইসলামের চাচা মো. আব্দুল আউয়াল। তিনি জানান, সোমবার বিকেলে সিজারের পর একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় আনোয়ারুলের স্ত্রী সেরিনা বেগম (২৪)।
উল্লেখ্য, সোমবার মোটরসাইকেলে স্ত্রীর সিজারের টাকা নিয়ে মো. আনোয়ারুল ইসলাম প্রতিবেশী হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টায় সময় ঠাকুরগাঁওগামী একটি যাত্রীবাহী বাস অপর একটি ট্রাককে অতিক্রম করার সময় তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনেই মারা যায়।
সৌজন্য – বাংলা মেইল ২৪