Published On: Sun, Feb 22nd, 2015

ভারতের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয়

Share This
Tags

india south africa

বিশ্বকাপ মানেই দক্ষিণ আফ্রিকা ফেভারিট। বিশ্বকাপ মানেই দক্ষিণ আফ্রিকা “চোকার”। চাপের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া বিশাল শক্তির দল। এটাই যেন নিয়তি প্রোটিয়াদের। এই বিশ্বকাপের আগেই তাদের অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স ঘোষণা দিলেন, “চোকার” অপবাদটা ঘুঁচাতে হবে। কিন্তু বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই ফিরে এলো “চোকার” দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের বিপক্ষে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে ১৩০ রানে হারলো তারা। আর বিশ্বকাপে চার চেষ্টায় এই প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারলো ভারত। এবারের বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে জিতলো ভারত।
ওয়ানডেতে এখন ৩০৭ রান তেমন বড় কিছু নয়। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে ৪০.২ ওভারে ১৭৭ রানে অল আউট হওয়া, বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের জন্য লজ্জারই ব্যাপার। প্রথমে দুই পেসারের কাছে ২ উইকেট হারালো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪০ রানে ওই দুই উইকেট হারানোর পরও বোঝা যায়নি সামনে কি অপেক্ষা করছে। ডি ভিলিয়ার্স ও ডু প্লেসিস মিলে ৬৮ রানের একটি জুটি গড়েছেন। কিন্তু চমৎকার একটি রান আউটের পর সবকিছু উল্টোপথে চলেছে প্রোটিয়াদের জন্য। মোহিতের থ্রো থেকে ধোনির চেষ্টায় ডি ভিলিয়ার্স রান আউট হয়েছেন ৩০ রান করে। তারপরও ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের। ডু প্লেসিস নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে চেয়েছেন ডেভিড মিলারের সাথে জুটি বেঁধে। কিন্তু ব্যক্তিগত ও দলের সর্বোচ্চ ৫৫ রানে ডু প্লেসিস মোহিতের শিকার হলে সব এলোমেলো হবার দিকে যায়। সব ছন্দ হারিয়ে ফেলে ভারতের প্রতিপক্ষ। ভারত চেপে ধরে। ৩ উইকেটে ১৩৩ রান থেকে ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনিরাও বেশি দূরে নিতে পারেননি দলকে। মিলার চমৎকার চেষ্টায় রান আউট। আর ২৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললে সেই ম্যাচে আর কিছুই করার থাকে না। অশ্বিন ৩টি এবং শামি ও মোহিত ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
ম্যাচের সেরা শিখর ধাওয়ান এদিন খেললেন বীরোচিত এক ইনিংস। গড়লেন দারুণ দুটি জুটি। আর মেলবোর্নে ধাওয়ানের দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার একটা হতাশার সময়ই কেটেছে। চার পেসার নিয়েও সুবিধা করতে পারেনি তারা। টস জিতে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩০৭ রান তুলেছে ভারত।
প্রথম ম্যাচে বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করেছেন। সুবাস পেয়েও সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন শিখর ধাওয়ান। কিন্তু ওই ম্যাচে বিরাটের সাথে একটা শতরানের জুটি হয়েছিল রোহিত শর্মা দ্রুত বিদায় নিলে। এদিনও ধাওয়ান পুশ করলেন কাভারে। একটা রান নিতে গেলেন। কিন্তু রোহিতের চেয়ে দ্রুত গতির ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তার সুপার থ্রোতে উইকেট ভাঙলো। ৯ রানে প্রথম উইকেট হারালো ভারত। হতাশার ব্যাপারটি এরপর একটু একটু করে আনন্দে রূপ নিতে থাকে। জমে উঠতে থাকে বিরাট কোহলি ও ধাওয়ানের জুটি। মেলবোর্নের উইকেটে বল উঠছিল। আর চার পেসার নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গতির তোড়ে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল ভারতকে। হলো উল্টোটা। উইকেটে জমে ওঠার পর প্রোটিয়া বোলারদের হতাশা উপহার দিতে থাকে কোহলি ও ধাওয়ানের জুটি। ১২৭ রানের জুটি গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। এরপর কোহলি ৪৬ রান করে তাহিরের বলে আউট হবার পর রানের গতি আরো বেড়েছে ভারতের। রাহানে এসেছিলেন কিছুটা ঝড়ের গতি সাথে নিয়ে। ধাওয়ান তো চালু গাড়ির মতোই তখন। দুজনে আরেকবার হতাশায় ডোবাতে থাকেন প্রতিপক্ষকে।

কোনোভাবেই উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না প্রোটিয়া বোলাররা। যখন তারা উইকেট নিতে শুরু করলেন ততক্ষণে ভারতের পা গিয়ে পড়েছে ভালো একটা সংগ্রহের কাছে। ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি আর বিশ্বকাপে প্রথম শতক তুলে নিলেন ধাওয়ান। ১২৫ রানের জুটি গড়ে উঠেছে ধাওয়ান ও রাহানের মধ্যে। ১৩৭ রান করে ধাওয়ান আউট হয়েছেন দলের ২৬১ রানের সময়। তখনও হাতে ৬ ওভারের বেশি আছে ভারতের। তবে এখান থেকেই দক্সিণ আফ্রিকা টপাটপ ৫টি উইকেট তুলে নিয়েছে। ২ উইকেটে ২৬১ থেকে ৭ উইকেটে ৩০৭ করেছে ভারত। সেখানে রাহানের ৬০ বলে ৭৯ রানের বড় ভুমিকা। কখনো বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে জিততে না পারার ব্যর্থতা এবার ঘুঁচানোর মতো একটা সংগ্রহ তো পেয়েই গিয়েছিলো ভারত।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.