না গেলেও চলবে পারলারে
নিয়ম করে প্রতি মাসে পারলারে যাওয়ার সময় আর সামর্থ্য হয়তো থাকে না সব সময়। হিসাবটাই দেখুন না। পারলারে পেডিকিওর মেনিকিওরে ন্যূনতম ৭০০ টাকা, ফেসিয়ালে ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা। চুলটাই বা বাদ যায় কেন? চুলের যত্নে খরচ পড়বে ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা। তবে ঘরে বসে প্রায় একই ধরনের যত্ন করতে পারেন আপনি খুবই কম খরচে। মুখে ফেসিয়াল, চুলে ডিপ কন্ডিশনিং আর হাত-পায়ে পেডিকিওর মেনিকিওর করে নিন ঘরে বসেই, কম খরচে, কম সময়ে।
পেডিকিওর মেনিকিওর
উপকরণ: পায়ের গোড়ালি ডোবে এমন একটি বড় বাটি, ব্রাশ, নেইল কাটার, কিউটিকল কাটার, ফাইলার, বাফার, শ্যাম্পু অথবা তরল সাবান, ময়েশ্চারাইজার, লবণ, পেট্রোলিয়াম জেলি। লেবু এবং চালের গুঁড়া, শসা গাজরের রস মিশিয়ে বানানো স্ক্রাব।
যেভাবে করবেন: বাটিতে হালকা কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু বা তরল সাবান মিশিয়ে নিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন পাঁচ মিনিট। পায়ে ব্যথা থাকলে পানিতে একটু লবণ ছিটিয়ে নিন। এরপর পা মুছে নখ কেটে নিন। কিউটিকলে সমস্যা থাকলে কিউটিকল কাটার দিয়ে সাবধানে অতিরিক্ত কিউটিকল সরিয়ে নিন। হাতের বেলায় প্রথমে নখ কেটে নেবেন, পরে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। কাটার পর ফাইল করে নেবেন। এরপর নখে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে আবার ভিজিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এরপর ম্যাসাজ করে পরিষ্কার করে নিন।
তারপর পালা প্রথমে তৈরি করে রাখা স্ক্রাবের। প্রথমে হাতে-পায়ে স্ক্রাব মেখে রাখুন তিন মিনিট। তারপর ম্যাসাজ করে নিন দুই মিনিট, তারপর ব্রাশ দিয়ে ঘষে পানিতে ধুয়ে নিন। পায়ের গোড়ালিতে থাকা শুকনা চামড়া ঝামাপাথর বা পিউমিস স্টোন দিয়ে ঘষে নিন। আবার পা ধুয়ে এবার নখে ও আঙুলে লেবুর রস মেখে পরিষ্কার করে নিন। নখ চকচকে করতে বাফার ঘষে নিতে পারেন। সবশেষে হাত-পা ধুয়ে মুছে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন।
তারপর ফেসিয়াল
উপকরণ: লোশন বা ম্যাসাজ ক্রিম (অবশ্যই আপনার ত্বকে যেটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই), বরফ, স্ক্রাব (চালের গুঁড়া, শসা, গাজরের রস ও মধু মিশিয়ে বানানো), পরিষ্কার তোয়ালে, কুসুম গরম পানি, ত্বক অনুযায়ী প্যাক যেমন:
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য: মসুর ডাল বাটা, শসার রস ও ডিমের সাদা অংশের পেস্ট অথবা মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের পেস্ট।
শুষ্ক ত্বকের জন্য: সয়া পাউডার, দুধের সর, কাঁচা হলুদ, গাজরের রস মেশানো পেস্ট।
সাধারণ ত্বকের জন্য: বেসন ও গেলাপজল, তার সঙ্গে গ্লিসারিন।
ত্বকে ব্রণ থাকলে: শসা, গোলাপজল ও কাঁচা হলুদের পেস্ট।
যেভাবে করবেন: ম্যাসাজ ক্রিমে বরফ রেখে প্রথমে ঠান্ডা করে নিন। তারপর গলাসহ পুরো মুখে ম্যাসাজ করুন। পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করে হালকা কুসুম গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে ত্বক মুছে নিন। এরপর স্ক্রাব করে নেবেন। প্রথমে তিন মিনিট ত্বকে মেখে রাখবেন, তারপর পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করবেন। স্ক্রাব করার ফলে আপনার ত্বকের ব্ল্যাক হেডস উঠে আসবে। আবার মুখ মুছে ত্বক অনুযায়ী প্যাক লাগাবেন। ২০ মিনিট রেখে বারবার পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
সবশেষে ডিপ হেয়ার কন্ডিশনিং
উপকরণ: তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার অথবা হেয়ার মাস্ক, মোটা দাঁতের চিরুনি বা ব্রাশ, নরম তোয়ালে।
যেভাবে করবেন: প্রথমে চুলে আলতো করে ম্যাসাজ করে তেল লাগিয়ে নিন। ম্যাসাজ করুন ১০ মিনিট, তারপর রেখে দিন আরও ১০ মিনিট। চুলে এবং মাথার ত্বকে সরাসরি শ্যাম্পু লাগানো ক্ষতিকর। তাই একটি বাটিতে প্রথমে শ্যাম্পু পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। ভেজা চুলে শ্যাম্পু করে নিন আঙুলের সাহায্যে চিরুনির মতো আঁচড়ে ফেনা তোলার মাধ্যমে। তারপর ধুয়ে ফেলুন, একটি ও সাবানের বুদবুদ না থাকা পর্যন্ত। তারপর হালকা করে পানি মুছে শুধু চুলে কন্ডিশনার লাগান। খেয়াল রাখবেন যেন কোনোমতেই চুলের গোড়ায় বা মাথার ত্বকে কন্ডিশনার না লাগে। যাদের চুল পড়ার সমস্যা, তাঁদের কন্ডিশনার ব্যবহার না করাই ভালো। তারা হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। বাজারেই হেয়ার মাস্ক কিনতে পাওয়া যায়। হেয়ার মাস্ক পানিতে ভিজিয়ে তেলের মতো চুলে লাগিয়ে নিন। চুলের ডগা থেকে হেয়ার মাস্ক লাগানো শুরু করতে হবে। পুরো চুলে লাগিয়ে সিঁথিতে ম্যাসাজ করে পরে ধুয়ে নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, চুলে কন্ডিশনার তিন মিনিট এবং হেয়ার প্যাক ১০ মিনিটের বেশি রাখা ঠিক নয়।