Published On: Tue, Mar 10th, 2015

টাইগার দের স্বপ্নযাত্রা

Share This
Tags

bd

ইতিহাস তৈরি করলো বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলো টাইগাররা। আর টাইগারদের প্রবল গর্জনে ১৫ রানের হার নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়লো ইংল্যান্ড। বৃটিশদের সূর্য ডুবিয়ে দিয়ে নতুন সূর্যের উদয় দেখলো বিশ্ব বাংলাদেশের মাঝে। ৪৮.৩ ওভারে ২৬০ রানে অলআউট হয়েছে ইংল্যান্ড।
৪৯তম ওভার। ১২ বলে ১৬ রান দরকার ইংল্যান্ডের। এক প্রান্তে ওকস ৪২ রানে দাঁড়িয়ে। এমন সময় ডেথ ওভারের বোলিংয়ে চমক দেখালেন রুবেল। শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করে ১৬ কোটি মানুষকে ভাসালেন আনন্দের সাগরে।
বাংলাদেশ স্বপ্নটা বুকে রেখে লড়াই শুরু করে ২৭৫ রান নিয়ে। এমনিতে মনে হচ্ছিলো ৩০/৪০ রান কম হয়ে গেছে। সেই কথাটাই আরো জানান দিচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। মঈন আলি আর ইয়ান বেল জমে গিয়েছিলেন উইকেটে। রান আউটের খাড়ায় মঈন (১৯) বিদায় নিলেও ইয়ান বেল ও অ্যালেক্স হেলস ৫৪ রানের জুটি গড়ে তুললেন। তাতে বাংলাদেশের ভেতরে একটু একটু করে ভয় ঢুকছিলো। অষ্টম ওভার থেকে দুই প্রান্তে স্পিন আক্রমণ চালালেন মাশরাফি। কিন্তু অ্যাডিলেডের উইকেটে টার্ন নেই। রানের রাশ টেনে ধরা গেল কিছুটা। কিন্তু উইকেট মিলছিলো না।
উইকেটের জন্য যখন আরাধনা করার মতো অবস্থা তখন সত্যিকারের নেতার মতো সামনে থেকে হামলা চালালেন মাশরাফি। হেলসকে (২৭) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই হামলা যুগপত হামলায় পরিণত হয় ২৭তম ওভারে গিয়ে। ইয়ান বেল ততক্ষেণ জাকিয়ে বসেছেন। কোয়ার্টার ফাইনালের মাঝে তাকেই বাংলাদেশের প্রধান বাধা মনে হচ্ছিলো। বাংলাদেশের স্পিড স্টার রুবেল হোসেন জোড়া আঘাত হানেন। ওই ওভারের প্রথম বলে বেলকে উইকেটের পেছনে মুশফিককে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। নেচে ওঠে গ্যালারি। নেচে ওঠে বাংলাদেশের লাল সবুজ। নতুন ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মরগানকে (০) দাঁড়াতেই দিলেন না রুবেল। ওই ওভারের চতুর্থ বলে সাকিবের চমৎকার ক্যাচ হয়ে ফিরলেন মরগ্যান। বাংলাদেশের আনন্দ দেখে কে! কিছুক্ষণের মধ্যে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে কনিষ্ঠতমজন তাসকিনও তার ভূমিকা পালন করেন। তার বলে স্লিপে টেলরের (১) ক্যাচ নেন ইমরুল।
ইংল্যান্ডের অবস্থাটা তখন দেখুন একবার। ১ উইকেটে ৯৭ রান ছিলো তাদের ২০তম ওভারে। সেখান থেকে ৩০তম ওভারে তারা ১৩২ রানে ৫ উইকেট হারানো দল। তার মানে মাঝের ১০ ওভারে ৩৫ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থার মাঝে পড়ে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের তিন পেসার ম্যাচে ফেরান টাইগারদের। মাশরাফির কাজ যে তখনো বাকি বোঝা গেল একটু পর। জো রুট প্রতিরোধ গড়ে দাড়িয়ে ছিলেন। তার থাকাটা বেশ অস্বস্তির মধ্যে রেখেছিলো টাইগারদের। আবার হলো মাশরাফি-মুশফিক যুগলবন্দী। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন রুট (২৯)। সত্যিকারের আতঙ্ক ইংল্যান্ড শিবিরে ছড়িয়ে দিয়ে আনন্দে মাতে টাইগাররা।
কিন্তু তাসকিন উইকেটের পেছনে বাটলারকে ক্যাচ বানালে আবার ম্যাচ জয়ের আশায় বুক বাধে টাইগাররা। ৫২ বলে ৬৫ রান করে তিনি ফেরায় স্বস্তি আসে বাংলাদেশ দলে। কিছুটা বিতর্ক সৃষ্টি করে জর্ডানের রান আউট হলো। কিন্তু ওকস ছিলেন। তামিম তার ক্যাচ ছেড়েছেন ৪৮তম ওভারে। ১৫ রান দিয়েছেন তাসকিন। তাই শেষ ১২ বলে দরকার পরে ১৬ রান। ওভারের প্রথম বলে ব্রডকে বোল্ড করেন রুবেল। এক বল পরেই অ্যান্ডারসন বোল্ড। শেষ ইংল্যান্ডের গল্প। ইতিহাস বাংলাদেশের। রুবেল ৪ উইকেট, মাশরাফি ও তাসকিন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.