নতুন সিম কিনতে আঙুলের ছাপ লাগবে

পুরনো সিমকার্ডের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে দুই পদ্ধতিতে পুনর্নিবন্ধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, মোবাইল অপারেটররা সিম পুনর্নিবন্ধনের নির্দেশনা দেবেন। দ্বিতীয়ত, গ্রাহকরা নিজেদের উদ্যোগে সিম পুনর্নিবন্ধন করতে পারবেন। গ্রাহকদের সুবিধার্থে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর আগামীতে সিম নিবন্ধনে জালিয়াতি এড়াতে গ্রাহকের আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও নভেম্বরে এ-সংক্রান্ত পাইলট প্রকল্প শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভুয়া পরিচয়ে সিমকার্ড কিনে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সব গ্রাহকের তথ্য যাচাই করে সিম পুনর্নিবন্ধনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর গ্রাহকদের সিমকার্ডের তথ্য যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগ সিম নিবন্ধনের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। এই কাজ শেষে পুনর্নিবন্ধন শুরু হবে। তবে সবার পুনর্নিবন্ধন লাগবে না। বিষয়টি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের সভাকক্ষে মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী, ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগ, এনটিএমসি ও বিটিআরসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সেখানে পুরনো সিম পুনর্নিবন্ধন দুটি পদ্ধতিতে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মোবাইল অপরেটরদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিমকার্ড পুনর্নিবন্ধন শুরু হবে। যাঁদের পুনর্নিবন্ধন লাগবে তাঁদের মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে গ্রাহকদের কাছে এসএমএস পাঠানো শুরু হবে। প্রথমে ২০১২ সালের আগে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া যেসব সিমের নিবন্ধন হয়েছে সেসব গ্রাহককে এসএমএস পাঠাবে মোবাইল অপারেটররা। এসএমএসের মাধ্যমে আইডি নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চাওয়া হবে। এরপর গ্রাহকদের দেওয়া তথ্য অপারেটররা পাঠাবে এনআইডিতে। সেখানে যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন চূড়ান্ত করা হবে।
আরেকটি পদ্ধতিতে গ্রাহকদের এসএমএসের মাধ্যমে একটি কোড জানিয়ে দেবে অপারেটররা। ওই কোড ব্যবহার করে এসএমএসের মাধ্যমে যেকোনো সময় গ্রাহকরা নিজের সিমের তথ্য যাচাই করে নিতে পারবেন। সিমটি অন্য কোনো নামে কেউ নিবন্ধন করেছে কি না তা-ও গ্রাহক জেনে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তিনি পুনর্নিবন্ধন করতে পারবেন।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, গ্রাহক ভোগান্তি এড়াতে সিম পুনর্নিবন্ধনের এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে সিম নিবন্ধনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে ১৪ হাজার ১১৭টি সিম নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই শেষে পুনর্নিবন্ধনের পর এ ধরনের অবৈধ ও ভুয়া সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সিম নিবন্ধনে জালিয়াতি বন্ধে আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক ডাটা পদ্ধতি) বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর এসব কার্যক্রম নিয়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে।
সূত্র আরো জানায়, আগামী নভেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক ডাটা পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে। মোবাইল অপারেটররা নিজেদের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে এই পদ্ধতি চালু করবে।
সুত্র – কালের কণ্ঠ