সিম কার্ড পুনর্নিবন্ধন বাধ্যতামূলক

আগামী তিন মাসের মধ্যে সব মোবাইল ফোন গ্রাহককে তাদের সিম কার্ড পুনর্নিবন্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চিঠি পৌঁছেনি বলে বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন।
এদিকে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের সিম কার্ডের নিবন্ধন নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গ্রাহক, মোবাইল অপারেটর, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা চলছে। সর্বশেষ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠির সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, মালিকানা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রত্যেককে সিমের নিবন্ধন বা পুনর্নিবন্ধন করতে হবে।
নিবন্ধন নিশ্চিত করা হবে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে থাকা তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে। সিম কার্ডের সঙ্গে জমা দেওয়া এনআইডির কপি সার্ভারের সঙ্গে মিলিয়ে সিমের নিবন্ধন করা হবে। কেউ নির্দিষ্ট সময়ে নিবন্ধন করতে না পারলে তার সিম কার্ড বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসিতে পাঠানো প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোন অপারেটরদের নিবন্ধনের জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সবার সিমের নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে। কাজ আগামী সাত দিনের মধ্যে শুরু করতে বলা হয়েছে। সিম কার্ড নিবন্ধনের পাশাপাশি মোবাইল সিম কার্ড বিক্রির সঙ্গে জড়িত ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদেরও তালিকা তৈরি করতে হবে। তারাও নিবন্ধিত হবে। নতুন সিম কার্ড সরবরাহের সময় ডিলার বা খুচরা বিক্রেতার নাম-ঠিকানা সংরক্ষণ করতে হবে অপারেটরদের।
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব গ্রাহককেই নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে। কারণ আগে তারা জাতীয় পরিচয়পত্রের যে কপি জমা দিয়েছে সেটা ঠিক কি না তা আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। এবার জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ পেলে সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এবারের নিবন্ধনের সব তথ্য সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। ফলে আর পুনর্নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না।’ একটু কষ্ট হলেও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য এটি খুবই প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিটিআরসির মুখপাত্র মো. সারওয়ার আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, যেহেতু মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি এখনো পৌঁছেনি, তাই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সবার নিবন্ধন লাগবে না। শুধু অনিবন্ধিত ও ভুয়া নিবন্ধনের কার্ডগুলোর নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও নিবন্ধনহীন সিম বিক্রি থামেনি। অপারেটরগুলোও অনিবন্ধিত সিম বিক্রিতে তেমন রাশ টানতে পারেনি। অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) সেক্রেটারি জেনারেল টি আই এম নূরুল কবির গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সিম কার্ড পুনর্নিবন্ধনে সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে এত বড় কাজের জন্য তিন মাস খুব কম সময়। এ কাজ ত্বরান্বিত করতে আমরা ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ চেয়ে আসছি। কিন্তু এখনো সে ব্যবস্থা করা হয়নি।’
সুত্র – কালের কণ্ঠ