Published On: Sat, Jul 6th, 2013

নিয়মিত ঘুমের বড়ি খেতেন মিতা নূর !

Share This
Tags

8_10185অভিনেত্রী মিতা নূরের মৃত্যু রহস্য যেন কাটছেই না। ১ জুলাই মিতা তার গুলশানের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আর এ আত্মহত্যার জট এখনো খুলেনি। তবে নতুন চমক দিলেন মিতার বড় ছেলে সেহজাদ নূর তাওস [প্রিয়]। ১৭ বছর বয়সী মিতার বড় ছেলে তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন তার মা মিতা নূর নাকি নিয়মিত ঘুমের বড়ি খেতেন। মাকে নিয়ে লেখা একটি লেখার এক অংশে তিনি এমনটা লিখেছন।

প্রিয়র লেখাটা ছিল এরকম ‌ `মার যখন খুব খারাপ লাগতো তখন তিনি ঘুমাতেন। অনেক বেশি সময় ঘুমানোর জন্য তিনি ঘুমের ওষুধ খেতেন। তিনি তার জীবনের শেষ দিনও এই একই কাজ করেছিলেন। তবে ওই রাতের ব্যাপারটি অন্যরকম ছিল। ওই ঘুমের বড়িগুলো তার সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছিল। আমি জানি এটা তিনি নিজে থেকে করেননি। কিন্তু তার বিষাদগ্রস্ততা আর ওই ঘুমের বড়িগুলোর প্রতিক্রিয়া থেকেই এটি হয়েছিল। তা না হলে পৃথিবীর সব ছাড়লেও তিনি কখনো আমাকে আর আর ভাইকে একা ফেলে যেতেন না।`

প্রিয় আরো যা লিখেছেন ‘আমার মা আমার দেখা সবচেয়ে সংবেদনশীল ও বুদ্ধিমতী নারী । তিনি সচেতন থাকলে এই ধরনের কাজ করতেন না। অনেক সংবাদ মাধ্যম তাকে সংঘাতিক ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু আমি সবাইকে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে বলতে চাই, তার একটি সুখী এবং অসাধারণ পরিবার ছিল। মতানৈক্য পৃথিবীর প্রত্যেকটি ক্ষুদ্র পরিবারেই থাকে, তবে এখানে তেমন সিরিয়াস কিছু ছিল না।

আমার মার হয়তো অনেক বন্ধুই ছিলেন, তবে তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিলাম আমি। হয়তো আমি কখনোই সেটি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করিনি, হয়তো আমি কখনোই এটি বুঝতে পারিনি যে তিনি আমাকে কতটা ভালোবাসতেন। তার মৃত্যুর আগের শেষ এক মাস মা অনেকগুলো ব্যাপারে তিনি বিষাদগ্রস্ত ছিলেন, সেগুলোর অধিকাংশই খুব ছোটখাটো বিষয়। তার অনেক মানুষের সঙ্গেই ছোট ছোট মতানৈক্য ছিল, যার মধ্যে আছে আমার বাবা এবং তার বাবা এবং আরো অনেকে। তবে সেগুলো খুবই সাধারণ মতপার্থক্য। তিনি সেসবের ব্যাপারে আমাকে সবই বলেছিলেন এবং আমি তাকে সবসময় বলেছি, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, এখানে দুশ্চিন্তার কিছুই নাই। তবে আমার আরো অন্য কিছু করা উচিৎ ছিল। কিন্তু তারপর ব্যাপারগুলো আরো খারাপ হতে থাকে এবং তিনি সম্ভবত খুব খারাপ বোধ করেছিলেন।

তিনি সবসময়ই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমার সঙ্গে পরামর্শ করতেন এমনকি এটি সামান্য একটি ব্যাপার হলেও। তিনি যেটি করেছেন এটি তার সিদ্ধান্ত ছিল না। আমি জানি তিনি আমাদের সবাইকে অনেক ভালোবাসতেন। তিনি এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। আমি তাকে ভালোবাসতাম এবং সবসময় বাসবো। তিনি আমার চিন্তা, স্বপ্ন, জীবন, ভাবনা সবকিছুকে সম্মান করতেন এমনকি নিজের চেয়ে বেশি। আমি যদি আমার জীবনে কোনোদিন সফল হই, তার পেছনের পুরো কৃতিত্বই আমার মায়ের।

আমার মা এখনো আমার মধ্যে আছেন। তিনি আমাকে সবসময়ই বলবেন কী করবো আর কী করবো না।

বেশ কিছু টেলিভিশন এবং পত্রিকা যা দাবি করেছে তা সত্য নয়। আমার মা দুর্বলচিত্তের নারী ছিলেন না। তিনি দৃঢ়চেতা, স্মার্ট, সংবেদনশীল এবং চমৎকার মানুষ ছিলেন। যা হয়েছে তিনি তা চাননি। বরং যেটি হয়েছে তা হলো, তখন তিনি সচেতন ছিলেন না। হয়তো এর বেশিরভাগই আমার ভুল কারণ, আমি আমার মাকে বুঝতে পারিনি। আমার মনে হয় আমি ভালো ছেলে নই। কিন্তু আমি এটি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, মা যা করেছেন তিনি তার বোধবুদ্ধিতে করেননি।

আমার মার ছিল একটি নিষ্কলঙ্ক খ্যাতি এবং নিষ্কলুষ চরিত্র। সবাই জানে, তিনি বাবার সঙ্গে কতটা সুখী ছিলেন। এবং মাত্র সপ্তাহ দুই আগে তাদের ২৪তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করেছি আমরা।

মার শিক্ষা, উপদেশ, চিন্তা আমাকে এবং আমার ভাইকে সারা জীবন পথপ্রদর্শন করবে। আমরা অবশ্যই একদিন তার মুখ উঁচু করবো, ইনশাল্লাহ। আমি তোমাকে ভালোবাসি মা।’

তবে মিতা নূরের ছেলে প্রিয়র এ লেখা পড়ে একটু খটকা লাগবে সবার। এ লেখা কি আসলেই প্রিয় তার মাকে নিয়ে লিখেছে। নাকি তাকে দিয়ে কেউ লিখিয়েছে? তবে মিতা নূরের ভাগিনা রাজীব ফেসবুকের লেখাটি প্রিয়র নিজেরই লেখা বলে দাবি করছেন । এদিকে মিতা নূরের স্বামী রানা এখনো মিডিয়া থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখছেন। তার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.