গরমে শিশুর আরামে
ভাপসা গরম। আবার কখনো দিন শেষে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। নামে বৃষ্টি। আবহাওয়ার এই মন-মর্জিতে বড়দের তো বটেই, শিশুদের অবস্থা হয় বেগতিক। সর্দি-কাশি, টনসিল ফুলে যাওয়া আর জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। একটু সতর্ক ও সচেতন হলে নিজে সুস্থ থাকতে পারেন। আবার শিশুকেও সুস্থ রাখতে পারেন।
ঘেমে-নেয়ে শিশু বাসায় ফিরলে
স্কুল বা খেলার মাঠ—যেখান থেকেই শিশু ঘেমে ফিরলে সবার আগে ভালো করে মাথা মুছে দিতে হবে। এরপর সুতির নরম কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর মুছে দিতে হবে। আবার কোনো শিশু যদি গোসল করতে চায়, তার ঠান্ডার সমস্যা না থাকলে তা-ও করতে পারে। যেসব শিশু একটুতেই ঘেমে যায়, তাদের একটু পর পর ভালোভাবে ঘাম মুছে দিতে হবে। যদি বেশি ঘামে, তাহলে তাকে স্যালাইনের পানি, ডাবের পানি ও তাজা ফলের রস খেতে দিতে হবে।
ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলা
গরম আবহাওয়া থেকে বাড়িতে এসেই শিশুরা ঠান্ডা পানি খেতে চায়। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি সব সময় শিশুদের জন্য ভালো। গরমে আরামের জন্য স্বাভাবিক পানির সঙ্গে সামান্য ঠান্ডা পানি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে টনসিল বা সর্দি-কাশি থাকলে ঠান্ডা পানি পুরোপুরি পরিহার করতে হবে।
গোসল প্রতিদিন
গরমে অবশ্যই প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। অনেক সময় বৃষ্টি হলে বা একটু ঠান্ডা মনে হলে অভিভাবকেরা শিশুদের গোসল করাতে চান না। কিন্তু গোসল না করালে ঘাম বসে ঠান্ডা লেগে যাবে। তবে জ্বর থাকলে নরম কাপড় ভিজিয়ে বারবার শরীর মুছে দিতে হবে। মাথা পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়া যেতে পারে। আবার দিনে যদি শিশু দুবারও গোসল করতে চায়, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। খেয়াল রাখতে হবে, দীর্ঘক্ষণ ধরে যেন গোসল না করে।
বৃষ্টিভেজা হলে
শিশু বৃষ্টিভেজা হলে সরাসরি গোসল করিয়ে দিন। মাথা মুছে গোসল করানোর দরকার নেই। এতে শিশু বিরক্ত হয়। দেরি হলে ঠান্ডাও লেগে যেতে পারে।
পোশাক হবে সুতির
শিশুদের পোশাক ঢিলেঢালা, সুতির ও নরম কাপড়ের হতে হবে। সুতির পোশাকের কোনো বিকল্প নেই। এমনকি রাতে শিশুকে কখনো খালি গায়ে ঘুমাতে দেওয়া ঠিক নয়। এতে ফ্যান বা এসির ঠান্ডা সরাসরি তাকে আক্রান্ত করতে পারে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, শিশুর ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে হবে। এসির কারণে যেন খুব বেশি ঠান্ডা না হয়ে যায়।
চুল ছোট রাখতে হবে
গরমে শিশুদের চুল ছেঁটে দিতে পারেন। ছোট চুলে আরাম পাবে। মেয়েশিশুদের বড় চুল যদি রাখতেই চান, তাহলে পনিটেইল করে রাখতে পারে। গোসলের পর চুল ভালোভাবে শুকাতে হবে।
ঘামাচি হলে
শিশুকে এক দিন পর পর সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে গোসল করাতে হবে। সাবান ব্যবহার না করলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে ঘামাচি হয়। আর যদি ঘামাচি হয়েই যায়, তাহলে নরম কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থান মুছে দিলে ঘামাচি দূর হয়। এরপর পাউডার দিলে সে সতেজ থাকবে। তবে ঘেমে যাওয়া শরীরে কখনো পাউডার ব্যবহার করা যাবে না।