Published On: Sat, Jul 27th, 2013

একজন কুৎসিত নারীর গল্প

Share This
Tags
image_55240হাইস্কুলে পড়ার সময় তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল ৮ মিনিটের ইউটিউব ভিডিও। বলা হয়েছিল তিনি `বিশ্বের কুৎ‌সিততম মহিলা।` তিনি লিজি ভালসাকেজ। ২৩ বছরের এই মার্কিন মহিলা এক বিরল রোগে আক্রান্ত। তার শরীরে নেই কোনও অ্যাডিপোজ টিস্যু। এই ২৩ বছর বয়সেও তার ওজন ৬০ পাউন্ড। কিন্তু তার জন্য থেমে থাকেনি জীবনের স্বপ্নপূরণ। হল ভর্তি শ্রোতার সামনে বক্তৃতা দেন তিনি। এই বছরই প্রকাশিত হতে চলেছে তার তৃতীয় বই।
অ্যাডিপোজ টিস্যু না থাকার ফলে শরীরে তৈরি হয় না কোনও পেশি, সঞ্চিত হয় না শক্তি, বাড়ে না ওজনও। সম্পূর্ণ মেদবিহীন শরীরের লিজির ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর অনেকেই তাকে বলেছিলেন, নিজের জীবন শেষ করে দিতে। কিন্তু সেইসব কিছু কানে না নিয়ে তখনই নিজের জীবনের চারটি লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিলেন লিজি।
প্রথমত, একজন সুবক্তা হওয়া, দ্বিতীয়ত, নিজের লেখা বই প্রকাশ করা, তৃতীয়ত, স্নাতক হওয়া ও নিজের ক্যারিয়ার ও পরিবার তৈরি করা।
সেই থেকেই গত ৭ বছরে ২০০-র বেশি ওয়ার্কশপে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। কীভাবে অভিনবত্বকে স্বীকৃতি দিতে হয়, বাধা, বিঘ্ন পেরিয়ে কীভাবে জীবনকে গ্রহণ করতে হয়, ভালবাসতে হয়, এই সাত বছর ধরে সেই বিষয়ের ওপরই বক্তৃতা দিয়ে চলেছেন তিনি।
শুধু তাই নয়। সান মার্কোজের টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন লিজি। সান মার্কোজেই নিজের প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে থাকেন তিনি। ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম বই `লিজি বিউটিফুল`। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় বই `বি বিউটিফুল, বি ইউ।` এই বছর তৃতীয় বই প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে লিজির।
একটি বেসরকারি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাতকারে লিজি বলেন, “শুধু বাড়িতে বসে থাকা আর মানুষের মন্তব্য শুনতে আমি চাই না। আমি তাদের সামনে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে বলতে চাই, আমি লিজি। আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকানো বন্ধ করো। নতুন কিছু শেখো।”
জন্মের সময় চার সপ্তাহের প্রি-ম্যাচিওর ছিলেন লিজি। ওজন ছিল মাত্র ২ পাউন্ড, ১০ আউন্স। লিজির মা রিতা জানান, লিজি এতই ছোট ছিল যে তার জন্য পুতুলের জামা কিনতে হত। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন লিজি কোনওদিনই হাঁটাচলা করতে পারবে না।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মস্তিষ্ক ও অস্থির গঠন স্বাভাবিক ভাবেই হতে থাকে। শরীরে শক্তি সঞ্চিত না হওয়ার কারণে প্রতি ১৫-২০ মিনিটে খেতে হয় তাকে। ৪ বছর বয়স থেকেই তার এক চোখ ঝাপসা হয়ে যেতে থাকে। সেই চোখ এখন সম্পূর্ণ অন্ধকার। অন্য চোখের দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে এসেছে।

Leave a comment

You must be Logged in to post comment.