ইন্টারপোলের সতর্কতা বিশ্বব্যাপী
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। সন্দেহভাজন আল-কায়েদার যোগসাজশে কয়েকটি দেশের কারাগার থেকে শত শত বন্দী পালিয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার এই সতর্কতা জারি করা হয়। আজ রোববার ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর এক খবরে এ কথা জানানো হয়।
ইন্টারপোল সদস্য দেশগুলোকে জেলপালানো সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের গতিবিধি শনাক্ত করতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
ইরাক, লিবিয়া, পাকিস্তানসহ নয়টি দেশের কারাগার থেকে গত মাসে শত শত সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়। এসব ঘটনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মনে করছে ইন্টারপোল। সমন্বিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে কি না, বা ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখায় সহায়তারও আহ্বান জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক এই পুলিশ সংস্থার পক্ষ থেকে। এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটতে পারে, সে জন্য কোনো গোয়েন্দা তথ্য থাকলে তাত্ক্ষণিকভাবে তা জানাতে ১৯০টি সদস্য দেশকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আল-কায়েদার ইয়েমেন শাখা আসন্ন দিনগুলোতে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় তার দূতাবাসগুলো বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়ার দুই দিন পর ইন্টারপোলের এই সতর্কবার্তা এল। শনিবার ইউরোপের জার্মানি ও যুক্তরাজ্যও ইয়েমেনে তাদের দূতাবাস অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার কথা জানায়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইন্টারপোলের এই সতর্কবার্তার মধ্যে যোগসূত্রের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে ইন্টারপোলের নোটিশে মার্কিন পদক্ষেপের উদাহরণ টেনে বলা হয়েছে, ইন্টারপোল সন্ত্রাসীদের জেলপালানোর ঘটনা এবং অন্যান্য সব সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার তথ্যকে গুরুত্ব দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, ইরাকের কুখ্যাত আবু গারিবসহ দুটি কারাগারে গত মাসের শেষের দিকে যে সমন্বিত হামলা চালানো হয়, তাতে নেতৃত্ব দেয় আল-কায়েদার ইরাক শাখা। সে সময় দুটি কারাগার থেকে শত শত বন্দী পালিয়ে যায়। ওই ঘটনার কয়েক দিনের মাথায় লিবিয়ার বেনগাজির একটি কারাগার থেকে পালিয়ে যায় এক হাজারের বেশি বন্দী। এ ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযুক্ত করলেও সেখানকার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভিন্ন কথা বলেন। আর গত ৩০ জুলাই পাকিস্তানের উপজাতি-অধ্যুষিত ডেরা ইসমাইল খান শহরের একটি জেলখানায় হামলা চালায় ১৫০ জনের মতো জঙ্গি। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, হামলাকারীরা পুলিশের ছদ্মবেশে ছিল। তারা মেগাফোন ব্যবহার করে বন্দীদের নাম ধরে ধরে ডেকে তাদের বেরিয়ে আসতে বলে।
ইন্টারপোলের নোটিশে অতীতের বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বর্ষপূর্তি আসন্ন হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে কেনিয়ার নাইরোবি ও তানজানিয়ার দার এস সালামে মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলার ঘটনার ১৫তম বর্ষপূর্তি হচ্ছে এ সপ্তাহেই। ওই হামলায় ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং চার হাজার জন আহত হয়েছিল।